নানাবিধ সংকটের মুখে জিএম কাদের, হারাতে পারেন সবকূল

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি, তবে এই দলের ভেতর শীর্ষ পর্যায়ে বেশকিছু সংকট দেখা দিয়েছে। জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান হুইসেন মোহাম্মদ এরশাদ এর প্রয়ানের পর দলটির নেতৃত্বে সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের সরকারের বিপক্ষে শক্ত অবস্থানে যাওয়ার পর দলের অভ্যন্তরে এবং বাইরে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। এদিকে তাকে বিরোধীদলীয় নেতা করার যে বিষয়টি সেটিও চূড়ান্ত হয়নি, রয়েছে ঝুলে।
এরই মধ্যে জিএম কাদেরের স্থলাভিষিক্ত রওশন এরশাদ দলের কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদকে উপনেতা হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছেন বলে গুঞ্জন ছড়াচ্ছে।

জানা গেছে, আগামী অক্টোবরের শুরুতে দেশে ফিরবেন রওশন এরশাদ। এরপর জাপার অভ্যন্তরীণ রাজনীতি কোন দিকে গড়বে তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। তবে সবচেয়ে বেশি, এই মুহুর্তে, সবার দৃষ্টি জাতীয় পরিষদের স্পিকারের অফিসের দিকে – রওশনকে সরিয়ে বিরোধীদলীয় নেতার পদে জি এম কাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করতে জাপার সংসদ সদস্য ও দলে নীতিনির্ধারণী পর্ষদ প্রেসিডিয়াম সভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্তটির কী হয়, সেদিকে।

এ প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করছি। স্পিকার এখনও আমাদের উত্তর দেননি। আমরা আরও একটু দেখব।
সূত্র বলছে, এ বিষয়ে স্পিকারের সিদ্ধান্তে সরকারের অবস্থানের আভাস মিলবে জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব। এর মধ্যে উপনেতা পদ থেকে জিএম কাদেরকে অপসারণ, কাজী ফিরোজ রশীদকে বদলিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা গুঞ্জন নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
উপনেতা হিসেবে কাজী ফিরোজ রশীদকে নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে রওশন এরশাদ শুক্রবার বিকেলে ব্যাংকক থেকে ফোনে বলেন, চিঠি পাঠানো হয়েছে। কখন পাঠানো হয়েছে জানতে চাইলে ফোনের ওপাশ থেকে কাউকে কথা বলতে শোনা যায়। তখন রওশন এরশাদ বলেন, ‘আমি চিঠি পাঠাইনি। এখন কেন দেবে? এটা দেওয়া মূল্য নয়।’

রওশন এরশাদ প্রায় ১০ মাস ধরে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার সঙ্গে রয়েছেন তার ছেলে সাদ এরশাদ ও ছেলের স্ত্রী।
তবে কাউকে উপনেতা করা হচ্ছে- এমন তথ্য তার কাছে নেই বলে জানান জিএম কাদের। কিন্তু চিঠি দেওয়ার এখতিয়ার তার (রওশন এরশাদ) নেই।
জাপা কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে রওশন এরশাদের আকস্মিক সম্মেলন আহ্বান এবং তার আগে টানা তিনটি ঘটনা নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি করেছে। গত আগস্ট মাসে জিএম একটি প্রাণনাশের হুমকি বার্তা পান। এরপর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন, রওশন এরশাদ সম্মেলন ডাকার পরদিন হঠাৎ তার মোবাইল ফোন ছিনতাই হয়। ঘটনার ধারাবাহিকতা কাকতালীয় নাকি অন্য কিছু তা নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা রয়েছে; তবে ডাকাতির ৯ দিন পর হাত বদলে যাওয়া জিএম কাদেরের মোবাইল ফোন গত বৃহস্পতিবার উদ্ধার করে পুলিশ।
জাপা দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট কাজী মামুনুর রশীদ নামে এক ব্যক্তি জিএম কাদেরকে তার মোবাইল ফোনে প্রাণনাশের হুমকি সম্বলিত একাধিক বার্তা পাঠান। এর মধ্যে কাজী মামুনুর রশীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে একটি বরই গাছের পাতার ছবি জিএম কাদেরকে পাঠানো হয়। এরপর তিনি কবরের ছবি পাঠান। এ ঘটনার পর গত ৭ আগস্ট উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন বিরোধী দলীয় উপনেতার সহকারী একান্ত সচিব মো. আবু তাইয়্যুব

জিএম কাদেরকে কবরের ছবি পাঠানোর কথা স্বীকার করেছেন কাজী মামুনুর রশীদ। তিনি বলেন, কেউ আমাকে এই (কবরের ছবি) পাঠিয়েছে, আমি শুধু এইডা উনারে নয়, এক থেকে দেড় শতাধিক লোককে ফরওয়ার্ড করেছি। এর উদ্দেশ্য হল আমাদের প্রত্যেকের কবর সম্পর্কে চিন্তা করা। কারণ আমাদের শেষ গন্তব্য কবর।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাজী মামুনুর রশীদ একসময় জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। দলীয় স্বার্থ ও শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে ২০২০ সালে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর তিনি বিদিশা সিদ্দিকীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কিছুদিন জাতীয় পার্টির নামে পৃথক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। বিদিশার সমর্থনে, কাজী মামুনুর রশীদ ২০২১ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হন। সম্প্রতি, তিনি নিজেকে বিদিশা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি বিরোধী দলীয় নেতা গোলাম মসিহার রাজনৈতিক সচিবের সঙ্গে যোগসাজশে জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে সক্রিয় রয়েছেন।

প্রাণনাশের হুমকি বার্তা পেয়ে থানায় অভিযোগ করার এক সপ্তাহ পর বিমানবন্দর সড়কের খিলক্ষেত এলাকায় দ্রুতগামী একটি গাড়ি চাপা দেয় তার গাড়ি। এতে জিএম কাদের বুকে আঘাত পান। তাকে বহনকারী গাড়ির দুটি দরজাই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৮ দিন পর ৩০ আগস্ট হঠাৎ করে জাপা সম্মেলন ডেকে গণমাধ্যমে নোটিশ পাঠান রওশন এরশাদ। পরদিন বিমানবন্দর সড়কে জিএম কাদেরের হাত থেকে মোবাইল ফোন চুরি হয়।
এ বিষয়ে জিএম কাদের বলেছেন, যেসব বিষয় ঘটছে সেটাকে আমি গুরুত্ব দিচ্ছি না বেশ স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছি। কিন্তু দেশে যে অবস্থা বিরাজ করছে, সেক্ষেত্রে রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছুই নেই, তবে সংকট কাটিয়ে উঠতে খুব বেশি সময় লাগবে বলে মনে হয় না জাতীয় পার্টির।

Check Also

স্কুলে ডেকে এনে প্রেমিককে জাপটে ধরে রোমান্সে মাতলেন ছাত্রী, এলাকাজুড়ে হইচই

সিনেমায় রোমান্টিক দৃশ্য হরহামেশাই দেখা যায়, যে সময় প্রেমিক প্রেমিকার মনেও রোমান্স জাগে। এটাই স্বাভাবিক। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *