দুই হাত তুলে ওয়াদা করুন নৌকায় ভোট দেবেন

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত জনতাকে নৌকায় ভোট দেয়ার ওয়াদা করালেন। তিনি বললেন, দুই হাত তুলে ওয়াদা করুন নৌকায় ভোট দেবেন। গতকাল মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের মিঠামইন সদরের হেলিপ্যাড মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় এই ওয়াদা করান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগামীতেও নির্বাচন আসবে। নৌকায় ভোট দিলেই দেশের উন্নয়ন হয়- এটা এখন সর্বজনীন বিদিত। আগামীতেও একমাত্র নৌকা মার্কার সরকার ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হবে। আগামীতে যে নির্বাচন হবে এই বছরের শেষে বা ২০২৪-এর জানুয়ারিতে, সেখানেও আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। আপনারা ওয়াদা করেন দুই হাত তুলে নৌকায় ভোট দেবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, নৌকা এটা আমাদের প্রতীক। এই নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই আজকে কিশোরগঞ্জের মানুষ আর অবহেলিত নেই। আজকে এটি উন্নত জেলা হিসেবে পরিণত হয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়েছে বলে, আজকে দেশের মানুষ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, কিশোরগঞ্জের হলো সেই জেলা, যেখান থেকে যুদ্ধের সময় যখন বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হয়েছিলেন তখন যে সরকার গঠন হয়েছিল সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আর তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তারা তখন মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান ছিলেন এই কিশোরগঞ্জের। আর এখন হামিদ ভাই, তিনিও প্রেসিডেন্ট। কাজেই আমি তো দেখি কিশোরগঞ্জ থেকে সবসময় রাষ্ট্রের প্রধান হয়ে সারা বাংলাদেশ পরিচালনা করছে। কিশোরগঞ্জবাসী ভোট দেন, তাই সবসময় আমরা আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আমার কোন চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। মা, বাবা, ভাই সব হারিয়েছি। আমি নিঃস্ব, রিক্ত। এদেশের মানুষকে আমার বাবা ভালোবেসেছিলেন, তিনি তার জীবন দিয়ে গেছেন। জীবন দিয়ে গেছেন আমার মা, আমার ভাইয়েরা। আজকে আমি আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি আপনাদের ভাগ্য পরিবর্তন করবার জন্য। আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন। এই সংগঠন যখন ক্ষমতায় আসে দেশের মানুষের কল্যাণ হয়। মানুষ খেয়ে পরে ভালো থাকে। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়।

১৪ বছরে আজকের বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে, উন্নয়নের রোল মডেল। এই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এই মিঠামইন, ইটনা, অষ্টগ্রামসহ কিশোরগঞ্জের প্রত্যেকটি সিটে গত নির্বাচনে এবং পরপর এই তিন নির্বাচনে আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন। তাই আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। এই বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা, সেই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই এদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। নৌকা মার্কায় ভোট দিলেই যে দেশের উন্নতি হয় সেটা আজকে সর্বজন বিদীত।

মঞ্চে উপস্থিত প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিককে দেখিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গত নির্বাচনে প্রেসিডেন্টের ছেলেকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আপনাদের প্রতি কতৃজ্ঞতা জানাই। আগামীতেও এক মাত্র নৌকা মার্কা সরকারে আসলে আপনাদের উন্নতি হবে, দেশের উন্নতি হবে। এই হাওড় অঞ্চলের উন্নয়নে যে সার্বিক কর্মসূচি আমরা বাস্তবায়ন করছি সেগুলো বাস্তবায়িত হবে। তিনি বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদেরকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। তাই আপনাদের পাশে আমরা সব সময় আছি।

আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে অন্য সরকারগুলোর কাজের তুলনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ওই সব সরকার লুটপাট, অর্থপাচার, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মানুষ হ'ত্যা করে, আর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর ওপর অকথ্য নির্যাতন চালায়। মানুষের ওপর অত্যাচার আর মানুষকে শোষণ করা ছাড়া আর কিছু তারা দিতে পারে নাই, পারবেও না। সংবিধান লংঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক স্বৈরশাসক বিএনপি গঠন করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) জনগণকে নির্যাতন ও লুটপাট ছাড়া কিছুই দিতে পারে না। কেননা যাদের হাতে এই দলটি সৃষ্টি, তারা কখনো জনগণের ভোট নিয়ে ক্ষমতায় যায় না, ক্ষমতা দখর করে। যে ক্ষমতা দখলকে উচ্চ আদালতও অবৈধ ঘোষণা করেছে। তাই যখনই এরা ক্ষমতায় এসেছে, এদেশের মানুষের সম্পদ লুট করেছে, বিদেশে পাচার করে এখন আরাম আয়েশে দিন কাটায়।
মিঠামইন উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মিঠামইন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল হক। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্থানীয় রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এম এ আফজাল প্রমুখ।

আবদুল হামিদ সেনানিবাস উদ্বোধন : এর আগে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাসের উদ্বোধন করেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে তিনি মিঠামইনে পৌঁছান। সেখানে তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাসের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী চলে যান প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের কামালপুর গ্রামের বাড়িতে। সেখানে তিনি সড়ক ও সেতুমন্ত্রী এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কয়েকজন সফরসঙ্গীকে নিয়ে মধ্যাহ্নভোজে অংশ গ্রহণ করেন। সেখানে ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। মধ্যাহ্নভোজ শেষে বিকেলে মিঠামইনে সুধী সমাবেশে যোগ দেন।
কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নির্মাণ করা হয় বহু দৃষ্টিনন্দন তোরণ। পুরো জেলায় সাজ সাজ রব পড়ে গিয়েছিল। বক্তৃতার জন্য নির্মাণ করা হয় সুদৃশ্য নৌমঞ্চ। মিঠামইনে তাকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কয়েক দিন ধরে আনন্দ মিছিল হয়েছে। সেনানিবাস থেকে প্রেসিডেন্টের বাড়ি যাওয়ার রাস্তা কামালপুর ফায়ার সার্ভিস অফিস এলাকা থেকে বক্তৃতা মঞ্চ পর্যন্ত ১৩টি তোরণ করা হয়। ফেস্টুন দিয়ে রাস্তার দু›পাশ সুসজ্জিত করা হয়েছে।

এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে মঞ্চ পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশ সাদা কাপড়ে মুড়ে দেওয়া হয়। এখনকার প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ যখন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ছিলেন সেই ১৯৮৮ সালের সেপ্টেম্বরেও একবার শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মিঠামইন সফর করেন। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আবারও মিঠামইন সফরে যান। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বৈষ্ণব জানান, সুধী সমাবেশের প্যান্ডেলে ৮০০ চেয়ার রাখা হয়। প্রবেশাধিকার সীমিত হলেও প্রধানমন্ত্রীকে একনজর দেখার জন্য জেলার অন্যান্য উপজেলাসহ হাওরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ ট্রলারযোগে মিঠামইনে হাজির হন। এমনকি পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকেও প্রচুর লোক আসেন নৌপথে। যদিও নিরাপত্তা ব্যবস্থার কড়াকড়ির কারণে তাদের সমাবেশস্থল থেকে অনেক দূরে থাকতে হয়। তারপরও পুরো হাওরাঞ্চল লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। ##

Check Also

ইভিএম থেকে সরে এসেছি, সিসি ক্যামেরাও থাকছেনা: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছেন, ইভিএম নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত নির্বাচন কমিশন সংখ‌্যাধিক‌্যের মতামতের ভিত্তিকে …

16 comments

  1. Very interesting drama for awmeleag

  2. জল রাশি

    নৌকায় ভোট দেওয়া লাগেনা,,,এমনিতে নৌকা জিতে যাইযে

  3. করলাম!

  4. No need hand up.

  5. দেহ চাইলে দেহ পাবি ভোট পাবি না শয়তান

  6. If vote is arranged in the daytime, then we will think whom we will vote.

  7. ,, নৌকা ডুবে যাচ্ছে

  8. বর্তমানে বাংলাদেশে সব অটো “ভোট ছাড়া সরকার আর নাই দরকার

  9. তুমি দুই হাত তুলে বলো ভোট কি দিনে নাকি রাতে।

  10. দিব না।

  11. ১৫ বছর ভোট দেয়ার সুযোগ পাই নাই, এই বার সুযোগ পেলে……

  12. M Sumon Islam Sumon

    স্বৈরাচারের আয়ু
    পৃথিবীর আয়ুর চেয়ে হবে না কিন্তু

  13. ২ হাত তুলে বললাম একটা ভোটও নৌকাই দিব না

  14. ১৪ বছর যাদের সেবা করলেন,তাদেরকে ওয়াদা করাতে হয়,তার মানে সেবায় গোঁজামিল আছে।যা সুষ্ঠু ভোটেই প্রমাণিত হবে।

  15. ওয়াদা করলো কোন দিনও নৌকায় ভোট দিবো না

  16. হাত তো তিনটি ! ডান হাত,বাম হাত, অজুহাত।
    সুতরাং বলতে হবে আপনার জন্য তিন হাত খুলে !