চালক হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়ায় অ্যাম্বুলেন্সের ৭ জনের মৃত্যু

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

পদ্মা সেতুর টোল প্লাজার কাছে দুর্ঘটনাকবলিত অ্যাম্বুলেন্সটির চালক রবিউল ইসলাম টানা ২৬ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়ায় দুর্ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ৷
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে চারটার দিকে রোগী নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে চলন্ত ট্রাককে ধাক্কা দিলে তিনিসহ ছয়জন মারা যান৷

শিবচর হাইওয়ে থানার পরিদর্শক আবু নাঈম মোহাম্মদ মোফাজ্জেল হক ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার প্রথম আলোকে বলেন, ‘পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার ২০০ থেকে ৩০০ মিটার সামনে ভোররাতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে৷ আমরা জেনেছি, অ্যাম্বুলেন্সের চালক রবিউল টানা ২৬ ঘণ্টা ডিউটিতে ছিলেন৷ এ কারণে তিনি ক্লান্ত ছিলেন৷ সম্ভবত গাড়ি চালাতে চালাতে তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন৷ এ কারণে চলন্ত ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় অ্যাম্বুলেন্সটি৷ সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সটি ট্রাকের নিচে চলে যায়৷ ঘটনাস্থলেই চালকসহ গাড়িতে থাকা ছয়জন প্রাণ হারান৷’

শিবচর হাইওয়ে থানার পুলিশ জানায়, ২৮ বছর বয়সি চালক রবিউল খুলনার দিঘলিয়ার চন্দনিমহল এলাকার কাওসার হাওলাদারের ছেলে৷ তিনি রোববার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ঢাকা থেকে রোগী নিয়ে ভোলায় যান৷ ভোলা থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বরিশাল শহরের বেলভিউ হাসপাতাল থেকে আরেক রোগী নিয়ে গতকাল সোমবার রাতে ঢাকায় রওনা দেন৷ দীর্ঘ ২৬ ঘণ্টা গাড়ি চালানোর কারণে তার শরীর ক্লান্ত ছিল৷ গাড়ি চালানোর সময় তিনি হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়েন৷ ওই অবস্থায় দুর্ঘটনাটি ঘটে৷ ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান রোগী জাহানারা বেগম (৫৫), তার মেয়ে লুৎফুন্নাহার লিমা (৩০), তাদের স্বজন ফজলে রাব্বি (২৮) ও আরেক স্বজন বরিশালের সাংবাদিক মাসুদ রানা (২৮) এবং চালক রবিউল ও রবিউলের সহকারী জিলানি (২৮) ৷

নিহত মা ও মেয়ের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আনারসিয়া গ্রামে৷ জাহানারার স্বামী লতিফ মল্লিক যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন৷ ফজলে রাব্বির বাড়িও একই গ্রামে৷ সাংবাদিক মাসুদ রানার বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাসাইল গ্রামে৷ আর রবিউলের সহকারী জিলানির বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর গ্রামে৷

অ্যাম্বুলেন্সের চালক রবিউলের ভাই ইয়াছিন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, তারা দুই ভাই অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে সংসার চালান৷ রবিউল রোববার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ঢাকা থেকে রোগী নিয়ে ভোলায় যান৷ভোলা থেকে ফেরার পথে তিনি বরিশাল শহর থেকে গতকাল আরেক রোগীকে নিয়ে ঢাকায় যান৷ ফেরার পথে পদ্মা সেতু এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েন৷

আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে রবিউলের স্বজনেরা জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন৷ হাসপাতাল চত্বরে আহাজারি করতে করতে রবিউলের শাশুড়ি রানি বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে সন্তানসম্ভবা৷ পাঁচ বছর বয়সি একটা ছেলে আছে৷ আমি এখন ওদের দায়িত্ব কার কাছে দেব?’

হাইওয়ে পুলিশের ফরিদপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মারুফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত ছয়জনের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে৷ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সচালক রবিউলের মরদেহ তার স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ বাকিদের স্বজনেরা এলে লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হবে৷ এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি৷

এনএস/কেএম (প্রথম আলো)

Check Also

মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি হবে ৩০ কিলোমিটার, আসছে নতুন আইন

ঢাকাসহ শহরের ভেতরে মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি হবে ৩০ কিলোমিটার। মহাসড়কে ১২৬–এর কম সিসির (ইঞ্জিনক্ষমতা) মোটরসাইকেল …

One comment

  1. ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *