বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড লাইভ দেখু'ন এই লিংকে rtnbd.net/live
”কৈশোর থেকে বই পড়ার নেশা। ছাত্রজীবনে টুকটাক লেখালেখিও করেছি। কিন্তু গল্পকার বা ঔপন্যাসিক হওয়ার বাসনা ছিল না। তবু কিছু ঘটনা থাকে, যা গল্পের মতো করে বলে যেতে ভালো লাগে। অনেক দিন আগে তেমনই এক ঘটনার সাক্ষী হয়েছিলাম কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে, যা মনে দারুণভাবে ছাপ ফেলেছিল। যে জন্য হাতে কলম তুলে নিতেও দ্বিতীয়বার ভাবিনি। সাংবাদিকতায় আমার পড়াশোনা, তবু সংবাদের মতো করে নয়, কাহিনির মতো করেই সেই ঘটনা বইয়ের পাতায় তুলে ধরেছি। তাই বাস্তবের সঙ্গে কল্পনার মিশেলে লিখে ফেলেছি এক উপন্যাস।
নামকরণ করেছি ‘এই কাহিনি সত্য নয়’। এখন উপন্যাস লেখার সূত্র ধরে কেউ যদি ঔপন্যাসিক বলতে চান, বলতে পারেন। তবে যেটা আমার মূল পরিচয়, সেই অভিনেতা পরিচয়ই ধরে রাখতে চাই।” নন্দিত অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদের এ কথা থেকে বোঝা যায়- হঠাৎ করেই ঔপন্যাসিক বনে গেলেও অভিনেতা পরিচয়টাই এখনও তাঁর কাছে মুখ্য। বই পড়া আর লেখালেখির নেশা বলেই হাতে কলম তুলে নিয়েছেন। লিখে ফেলেছেন জীবনের প্রথম উপন্যাস, যা প্রকাশ পেয়েছে এবারের একুশে বইমেলায়। তাই শুরুতেই তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল- কথাশিল্পী হিসেবে যখন নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো, সেটি অব্যাহত থাকবে কিনা? এর উত্তরে ফেরদৌস বলেন, ‘অভিনয় ক্যারিয়ার যেমন দর্শক প্রত্যাশা পূরণের ওপর নির্ভরশীল, তেমনি লেখালেখি অব্যাহত থাকবে কিনা তা নিশ্চিত করবেন পাঠক।
ভালো রিভিউ পেলে লেখালেখির উৎসাহ পাব। তাই সবকিছুই নির্ভর করছে সময়ের ওপর। যে সময়টা আমাকে বলে দেবে কখন কী করতে হবে।’ তাঁর এ কথায় বোঝা যায়, পাঠক চাইলে আগামীতে নতুন কাহিনি তুলে ধরার জন্য আবারও হাতে কলম তুলে নেবেন এ অভিনেতা। নিজের লেখা কাহিনির চরিত্রগুলো পর্দায় তুলে ধরার ইচ্ছা আছে কিনা- জানতে চাইলে জবাবে ফেরদৌস বলেন, ‘গল্প-উপন্যাস থেকে নাটক-সিনেমা নির্মাণ নতুন কিছু নয়। ভবিষ্যতে কোনো নির্মাতা যদি মনে করেন, আমার লেখা কাহিনি পর্দায় তুলে ধরা যেতে পারে, তাহলে আমার দিক থেকে কোনো আপত্তি নেই। এমনকি নিজের সৃষ্টি করা চরিত্রে অভিনয় করতে পারি যদি নির্মাতারা চান। সেখানে নির্মাতাদের ভাবনাই প্রাধান্য পাবে।’
কথাশিল্পী ফেরদৌসের ভাবনার কথা জানা হলো। এবার ফিরে যাই একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত অভিনেতা ফেরদৌস প্রসঙ্গে। দেশের পাশাপাশি অনেক দিন পর এই অভিনেতাকে দেখা যাবে কলকাতার ছবিতে। সম্প্রতি নির্মাতা অর্কদীপ মল্লিকা নাথের ‘মীরজাফর চ্যাপ্টার টু’ ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। এ ছবিতে তাঁর সহশিল্পী শ্রীলেখা মিত্র, শ্রাবন্তী চ্যাটার্জি, স্বদেশি অভিনেতা রোশানসহ অনেকে। পাশাপাশি দেশীয় একাধিক ছবির কাজ নিয়ে কাটছে তাঁর ব্যস্ত সময়। দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত ‘সুজন মাঝি’ ছবিতে আরও একবার জুটি বেঁধেছেন অভিনেত্রী নিপুণের সঙ্গে। পূর্ণিমার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করছেন ‘আহারে জীবন’ নামে আরেকটি ছবি।
মুক্তির প্রতীক্ষায় আছে ‘জ্যাম’, ‘গাঙচিল’, ‘১৯৭১ :সেইসব দিনগুলি’, ‘কাঠগড়ায় শরৎচন্দ্র’সহ আর কিছু ছবি। এ সময়ের ছবিগুলো নিয়ে ফেরদৌস বলেন, ‘শুরু থেকেই চেষ্টা ছিল ভালো গল্প ও চরিত্রে নিজেকে তুলে ধরার। অভিনয়ে নিজেকে ভেঙে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে চাই বলেই জনপ্রিয়তার স্রোতে গা ভাসাইনি। সময়ের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অভিনয়ে ভালো গল্প, চরিত্র ও নির্মাতাকে প্রাধান্য দিয়েছি।’ প্রযোজক হিসেবেও কি একই ভাবনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘দর্শকের মনে ভাবনার খোরাক জোগাবে- এমন কিছু বিষয় ও গল্প নিয়ে ছবি নির্মাণ করতে চাই। তাই প্রযোজনায় ব্যবসায়িক দিকটি বড় করে দেখিনি। সেই কাজটি করতে চাই, যা দর্শকের মধ্যে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবে।’