ভারতের জোড়াতালি দেয়ার দীর্ঘ ‘যুগাড়’ সংস্কৃতি

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

‘যুগাড়’ শব্দটাকে সাধারণত কোন একটা ত্রুটিপূর্ণ মেশিনকে বিভিন্ন কৌশলে সক্রিয় করা বা সচল করার প্রক্রিয়াকে বুঝিয়ে থাকে। পৃথিবীর অন্যান্য জায়গায় এ ধরনের জিনিস ঠিক করার কৌশলকে কিছুটা হয়তো ব্যবহার করা হয়, কিন্তু ভারতে এটাকে গ্রহণ করা হয়েছে সামগ্রিকভাবে।

বহু ভারতীয় ব্যাপকভাবে ‘যুগাড়ের’ উপর নির্ভর করে। সাধারণভাবে এটাকে উদ্ভাবন ও মানিয়ে নেয়ার একটা সক্ষমতা হিসেবে দেখা হলেও অনেকে আছেন যারা মনে করেন এই ধরনের ‘নকলবাজির’ কারণে দীর্ঘমেয়াদে মান নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ব্র্যাস ট্যাক্স মহড়ার সময় ডিফেন্ডিং কমান্ডার হিসেবে আমার সামনে ১২০ কিলোমিটার ফ্রন্টিয়ার ছিল এবং ছিলো বিরোধী পক্ষের ১৫টি সাঁজোয়া রেজিমেন্ট (৬৭৫টি ট্যাঙ্ক)। এ রকম বড় শক্তিকে ঠেকানোর জন্য অন্য কিছুর সাথে সাথে আমার দরকার ছিল ফ্রন্টলাইনের ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী মাইন। ওই দীর্ঘ ফ্রন্ট্রিয়ানে ম্যানুয়ালি মাইন স্থাপন করাটা ছিল অসম্ভব। এই মাইন স্থাপনের জন্য মেকানিক্যাল মাইন স্থাপন যন্ত্র দরকার এবং সেনাবাহিনীর এই যন্ত্র একটিও নেই।

মহড়ার আগে, আমরা রাজস্থানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলাম। যেখানে আমি দেখলাম যে, অস্বাভাবিক বড় ফার্ম মেশিনারি ওয়ার্কশপে মেরামতের জন্য পড়ে আছে। আমি মেকানিককে জিজ্ঞাসা করলাম এগুলোতে মাইন বসানোর সরঞ্জাম সংযুক্ত করে দিতে পারবে কি না। আমি ব্যাখ্যা করে বললাম যে, মাইনগুলো বড় যানবাহনে নিয়ে আসা হবে এবং সেগুলো ম্যানুয়ালি নিচে নামানো হবে এবং অনেক গভীর গর্তে সেগুলো স্থাপন করতে হবে। এরপর সেটা মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

সরঞ্জামাদি একটা জিপ ট্রেইলারের সাথে সংযুক্ত করা হবে, যেগুলো টেনে নিয়ে যাবে এই বড় যানবাহনগুলো। মেকানিক মনে হলো পুরো বিষয়টিই বুঝেছে। তার কাছে একটা ডামি মাইন আর জিপ ট্রেইলার রেখে আসা হলো।

মাত্র চার দিনের মধ্যে তার ফেব্রিকেশানের কাজ তৈরি হয়ে গেলো। তাকে যা বলা হয়েছিল, তার বাইরে বালুময়, শক্ত বা আধাশক্তি ভূমিতে ভারসাম্য রক্ষার জন্য অতরিক্তি সরঞ্জাম এর সাথে সে যুক্ত করে দিয়েছিল। ট্রেইলার আর এর নিচের কনট্র্যাপশান একটা টাটরা যানবাহনের সাথে যুক্ত করা ছিল। এই সরঞ্জাম দিয়ে চমৎকারভাবে মাইনগুলো স্থাপন করা হয়েছিল।

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল সুন্দারজিকে অনুরোধ করা হলো এই সরঞ্জামটি দেখতে। ডেপুটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অরুন সিংকে সাথে নিয়ে তিনি এসেছিলেনন। দুজনেই পালাক্রমে জিপ ট্রেইলারে বসে প্রত্যক্ষ করেন, কিভাবে এই সরঞ্জাম কাজ করছে। এটা দেখতে মজাই লাগছিল যে, পালাক্রমে তারা মাইন বসানোর প্রক্রিয়াটা মনোযোগ দিয়ে দেখছিলেন। একটা পথের ধারের মেকানিকের সহায়তায় মেকানিক্যাল মাইন স্থাপন যন্ত্র তৈরি করাটা ছিল সত্যিই একটা উল্লেখযোগ্য অর্জন এবং এটা ছিল ভারতের মহান ‘যুগাড়’ সংস্কৃতির অংশ।

Check Also

খামারে বিস্ফোরণে মারা গেছে ১৮ হাজার গরু

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি দুধের খামারে বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রায় ১৮ হাজার গরু মারা গেছে বলে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *