‘ফিটনেস’ সমস্যায় রামপাল

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট, কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে ৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করতে থাকলে বয়লারের টিউব ফেটে যাচ্ছে। বয়লারটি জার্মানির হলেও এর টিউব ভারতীয়। টিউব ফেটে যাওয়া মাত্র কেন্দ্রটির উৎপাদনও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কাছাকাছি সময়ে পায়রায় একই ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়, যার টিউব এসেছে জাপান থেকে। সেখানে কোনো ত্রুটি দেখা দেয়নি। তার ভাষ্য, রামপালের টিউবটি দুর্বল ও নিম্নমানের হওয়ায় বারবার ফেটে যাচ্ছে। তবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ বিষয়ে বলেছেন, ‘সব ঠিক আছে। কোথাও কোনো সমস্যা নেই।’
কয়লার অভাবে ২৬ দিন বন্ধ থাকার পর গত বুধবার ফের চালু হয়েছে রামপাল কেন্দ্রটি। বৃহস্পতিবার সেখানে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে বলে প্রকল্প পরিচালক সুভাষ কুমার পাণ্ডে সংবাদ সম্মেলন করে জানান।

শুক্রবার সকালে উপমহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, কেন্দ্রটিতে ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন হচ্ছে। যদিও বিকালে তিনি বলেন, ৪০০ মেগাওয়াট। আর সন্ধ্যায় বলেন, ফুল লোডে অর্থাৎ ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এসব তথ্য থেকেও বোঝা যায়, কেন্দ্রটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ৬৬০ মেগাওয়াট সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না।

রামপাল কেন্দ্রটি এখন পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হলে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার কথা। এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে, নিম্নমানের যন্ত্রাংশের বিষয়ে। যে কারণে পূর্ণ ক্ষমতায় দীর্ঘ সময় ধরে উৎপাদন চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরুর পর গত চার মাসের চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট মাত্র ৯৭ ঘণ্টা ৬০০ মেগাওয়াটের ওপরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। কেন্দ্রটির দুটি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। একেকটি ইউনিটের ক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। দ্বিতীয় ইউনিট জুনে চালু হওয়ার কথা।

ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটিপিসি) এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) যৌথভাবে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (বিআইএফসিএল) গঠন করে কেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে। ভারতের এক্সিম ব্যাংকের ঋণসহায়তায় কেন্দ্রটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভারত হেভি ইলেকট্রিক লিমিটেড (ভেল)।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র একটি বেইজ লোড পাওয়ার প্ল্যান্ট। এ ধরনের কেন্দ্রের প্রধান শর্ত হচ্ছে দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ণ ক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। সাধারণত বিদ্যুৎ খাতের মেরুদণ্ড হিসেবে এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্রকে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু রামপাল সেই শর্ত পূরণ করার ক্ষেত্রে শুরুতেই সংকটে পড়েছে। কোনো কেন্দ্র দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ণ ক্ষমতায় উৎপাদন করতে না পারলে তাকে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় না।

বিদ্যুৎ বিভাগ, পিডিবি এবং রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র বলছে, কেন্দ্রটি ৬০০ মেগাওয়াট লোডে দীর্ঘ সময় ধরে চালালে বয়লারের টিউব ফেটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। একাধিকবার এমন ঘটায় কেন্দ্রটির পূর্ণক্ষমতায় উৎপাদন করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। একটি নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রে শুরুতেই এ ধরনের ত্রুটি দেখা দেওয়ায় তারা এর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, বয়লারের একটি সেকশনে টিউব থাকে। তার ভেতরে পানি থাকে। টিউব থেকে বাষ্প বের হয়ে তা টারবাইন ঘোরায়। এই বাষ্পের পরিমাণ বাড়ালেই টিউব ফেটে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের সরকারি খাতে রামপালই এ ধরনের ত্রুটিযুক্ত একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্র নয়। এর আগে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় চীনা কোম্পানি কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে। তাড়াহুড়া করে কেন্দ্রটি নির্মাণের পরপরই ঠিকাদার কোম্পানিকে পিডিবি অর্থ পরিশোধ করে দেয়। বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওই দুটি ইউনিট যান্ত্রিক ত্রুটিতে প্রায়ই বন্ধ থাকে। এরপর সেখানে নতুন আরও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে পিডিবি।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বলেন, এর আগেও বিদ্যুৎকেন্দ্রে এ ধরনের নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ব্যবহারের উদাহরণ রয়েছে। যেমন বিএনপি সরকারের আমলে টঙ্গিতে একটি গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছিল। ওই কেন্দ্রটি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফেঞ্চুগঞ্জে একটি সার কারখানা নির্মাণেও নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছিল। বয়লারের মধ্যে টিউব ফেটে গিয়ে থাকলে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

রামপালের ৯১ দিনের উৎপাদন বিশ্লেষণ

গত বছর ১৪ অক্টোবর রাত ৯টায় আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ নেয় পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। ওইদিন সব মিলিয়ে ৪ ঘণ্টা কেন্দ্রটি চালানো হয়। তার পরদিন চালানো হয় ২ ঘণ্টা। রাত ১টা এবং ২টায় ২০১ মেগাওয়াট লোডে চালানো হয়। তার পরের দিন বন্ধ ছিল কেন্দ্রটি। পরীক্ষামূলক উৎপাদনের সময় এভাবে কেন্দ্রটি চালিয়ে নানা সমস্যা দেখা যায়। সেগুলো সংস্কারও করা হয়। ২৩ অক্টোবর ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। তবে ২৫ অক্টোবর থেকে টানা ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রটি বন্ধ রাখা হয়। ওই সময় বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের জন্য কেন্দ্রটি বন্ধ রাখা হয়েছে।

২৫ নভেম্বর রাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আবার উৎপাদনে আসে। ওইদিন ২২ ঘণ্টা উৎপাদনে ছিল। সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল ১ ঘণ্টায় ৩৮১ মেগাওয়াট। ২৬ নভেম্বর সকাল ৮টায় বন্ধ হয়ে যায়। তখন কেন্দ্রটি থেকে ২৭২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছিল। ২৭ থেকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রটি বন্ধ ছিল। ১ ডিসেম্বর উৎপাদন প্রথম ৫০০ মেগাওয়াট অতিক্রম করে। ওইদিন দুপুর ১টা এবং ৩টায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল যথাক্রমে ৫৭৬ মেগাওয়াট ও ৫৭৪ মেগাওয়াট। ১ ডিসেম্বর রাতে কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে আবার ২ ডিসেম্বর ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সকাল ১০টায় চালু হয়।

দেখা যায়, ৩ থেকে ৫ ডিসেম্বর তিন দিনই টানা ৭২ ঘণ্টা কেন্দ্রটি চলে। তবে ওই তিন দিনে পূর্ণ ক্ষমতায় চলেনি। কেন্দ্রটির সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল ৫৫১ মেগাওয়াট। ৭২ ঘণ্টা চলার পর ৬ থেকে ৯ ডিসেম্বর সকাল ৭টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। ১০ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর কেন্দ্রটি ২৪ ঘণ্টা করে চলে। এই সময় বাণিজ্যিক উৎপাদনের তারিখ ঘোষণার জন্য দুটি কমিটি গঠন করে পিডিবি। একটি কমিটির প্রধান ছিলেন পিডিবির আইপিপি সেলের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম। মূলত কেন্দ্রটির বাণিজ্যিক উৎপাদনের দিনক্ষণ ঘোষণা করার কথা তাদের। ওই কমিটি ২১ ডিসেম্বর রামপাল যায়। ওই সময় টানা ছয় দিন কেন্দ্রটি চালানো হয়। এর মধ্যে ৭২ ঘণ্টা ফুল লোডে চলে। ২০ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ৪টা থেকে অর্থাৎ ২১ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর রাত ৪টা পর্যন্ত কেন্দ্রটি ৬১৭ মেগাওয়াটের ওপরের লোডে চালানো হয়। এরপর ২৩ ডিসেম্বরের পর আর একবারও ৫০০ মেগাওয়াটের ওপরে তোলা হয়নি। অধিকাংশ সময় উৎপাদন ৪০০ মেগাওয়াটের মধ্যে রাখা হয়। ১১ ও ১২ জানুয়ারি উৎপাদন ৫৫৯ মেগাওয়াট পর্যন্ত তোলা হয়। তবে একবারের জন্য ৬০০ মেগাওয়াট অতিক্রমের চেষ্টা করা হয়নি।

কেন্দ্রটির যান্ত্রিক ত্রুটির বিষয়ে জানতে চাইলে পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী (আইপিপি সেল) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাইলেও সবকিছু বলতে পারি না। আমরাও টিউব ফেটে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। ৬১৭ মেগাওয়াট লোডে ৭২ ঘণ্টা চালিয়ে দেখেছি। আমাদের চোখে কোনো সমস্যা ধরা পড়েনি।’ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির অর্ধেক মালিকানা পিডিবির হাতে। বাণিজ্যিক উৎপাদনের দিন ঘোষণা করার জন্য গঠিত দুই কমিটির ১০ জনের ৯ জন সদসই পিডিবির কর্মকর্তা। এতে বিষয়টি প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায় বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

রাপমাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ত্রুটির বিষয়টি জানিয়ে আমরা ভেলকে চিঠি দিয়েছি। সরাসরি তাদের সঙ্গে আলাপও হয়েছে। ভেলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে অনেক কিছু হয়ে গেলেও খুব একটা সমাধান হয়নি। আপাতত টিউবটি সংস্কার করে দেওয়া হলেও দীর্ঘমেয়াদে কেন্দ্রটির নির্ভরযোগ্য উৎপাদন নিয়ে সংশয় রয়ে যাচ্ছে।’

ভবিষ্যতে কি লোকসান হতে পারে

এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র দুভাবে সংকট সৃষ্টি করতে পারে। প্রথমত, কেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি ঠিকভাবে পরিমাপ না করলে সরকারকে বেশি ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পরিশোধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রটি নির্মাণের এই পর্যায়ে সবকিছু মেনে নিলে ভবিষ্যতে বড়পুকুরিয়ার মতোই কেন্দ্রটি পিডিবিকে ভোগাবে। কেন্দ্র না চললেও ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পরিশোধ করতে হবে। একই সঙ্গে ঋণও পরিশোধ করতে হবে। এখন পর্যন্ত কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে সরকার যে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দিয়েছে, তার মধ্যে সর্বোচ্চ পেয়েছে রামপাল। কেন্দ্রটি কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন করুক বা না করুক, তাকে প্রতি উইনিটের জন্য ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দিতে হবে ৪ দশমিক ৮৫ সেন্ট। অর্থাৎ কেন্দ্রটি যদি যান্ত্রিক ত্রুটিতে না চলে, তাহলেও সরকারকে অর্থ পরিশোধ করে যেতে হবে। এতে বিদ্যুৎ খাতের লোকসান বাড়বে।

ফিশনার কী করে দুই জায়গার পরামর্শক হয়

বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে জার্মান প্রতিষ্ঠান ফিশনার। কেন্দ্রটি নির্মাণ তদারকির দায়িত্বও তাদের। রামপালের নির্মাণ ত্রুটির খবর সরকার জানতে পেরে ফিশনারকে কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি টেস্ট করতে বলে। যাতে পিডিবির বাইরে গিয়ে তৃতীয়পক্ষের একটি পর্যবেক্ষণ পাওয়া যায়। ফিশনার বিদ্যুৎ বিভাগে একটি রিপোর্ট দিয়ে বলেছে, সব ঠিক আছে। তবে সরকার এ বিষয়ে অধিকতর পর্যবেক্ষণের পক্ষে।

তবে প্রশ্ন উঠেছে একই ফিশনার দুই ক্ষেত্রে কাজ করছে কীভাবে। কারণ পরামর্শকের দায়িত্ব নির্মাণে সহযোগিতা করা আর তদারকের দায়িত্ব নির্মাণকাজ বুঝে নেওয়া। সুতরাং পরামর্শক ও তদারক ভিন্ন প্রতিষ্ঠান হওয়া সংগত। তা ছাড়া কর্মকর্তারা বলছেন, ফিশনার জার্মানির কোম্পানি হলেও রামপালে যেসব প্রকৌশলী কাজ করছেন, তাদের অধিকাংশ ভারতীয়। নির্মাণ-ঠিকাদারও ওই দেশের । এখানে কাজের ক্ষেত্রে কোনো ঘাপলা আছে কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা। পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমত উল্লাহ বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে তারা কারও প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করবে, তাহলে ফিশনারকে বাদ দিয়ে তৃতীয় কোনো পক্ষকে বেছে নিতে হবে।’

তাড়াহুড়ার ফল ভালো হয় না

বিদ্যুৎ খাতের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এ ধরনের কেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে একটি ওয়ারেন্টি থাকে। এর মধ্যে সমস্যাগুলোর সমাধান করে নিতে হয়। একবার কেন্দ্র নির্মাণ শেষে ঠিকাদার সব বিল তুলে নিয়ে গেলে তখন পিডিবি ও এনটিপিসি উভয়ের জন্যই এই সমস্যা গলার কাঁটা হতে পারে। এ ধরনের একটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে তার ভার বহন করা দেশের অর্থনীতির জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে।

পিডিবির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী (সিস্টেম প্ল্যানিং) মিজানুর রহমান বলেন, ‘কোনো কেন্দ্রে এ ধরনের সমস্যা হলে শুরুতেই সেটি ঠিকাদারকে দিয়ে ঠিক করিয়ে রাখতে হবে। তাড়াহুড়ার ফল কোনো দিন ভালো হয় না। বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এর বড় উদাহরণ। ওই কেন্দ্রটি নির্মাণের শুরুতেই ত্রুটি ছিল। এখনও সেই সমস্যা থেকে বের হতে পারেনি। প্রায় সময়ই কেন্দ্রটি বন্ধ রাখতে হয়। রামপালেও যাতে সে ধরনের সমস্যা থেকে না যায় তা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’

সরকার কী বলছে

মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা নাখোশ। এ ধরনের কেন্দ্র নির্মাণপর্যায়ে সঠিক নজরদারির অভাব ছিল বলেও আলোচনা হচ্ছে। কেউ অবশ্য সরাসরি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেছেন, ‘সব ঠিক আছে। কোথাও কোনো সমস্যা নেই।’

Check Also

এস আলম গ্রুপের ‘অর্থনৈতিক আগ্রাসন’ জেনেও সবাই নীরব ছিল

এস আলম গ্রুপ অর্থনৈতিক আগ্রাসন চালিয়ে একটি ব্যাংকের টাকা দিয়ে আরেকটি ব্যাংক কিনেছে। এখন এসব …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *