ভাতিজাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে চার লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফুফুর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ফুফুর নাম আলেয়া বেগম। তিনি ভোলার বোরহান উদ্দিন উপজেলার কুদবা ইউনিয়নের কুদবা গ্রামের পল্লী পশু চিকিৎসক বশির আহমেদের স্ত্রী।
ভুক্তভোগী মো. জুয়েলে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের বটগাছতলার শহীজল মাঝির ছেলে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, গত ২৯ এপ্রিল সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়ার কথা বলে জুয়েলকে ঢাকা-চট্টগ্রামের উড়োজাহাজের টিকিট ধরিয়ে দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে নেমে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন জুয়েল।
ঘটনার পর থেকে আলেয়া বেগম, তার ছেলে আওলাদ হোসেনসহ অভিযুক্ত স্বজনরা আত্মগোপনে রয়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত অন্যরা হলেন, আওলাদের স্ত্রী আয়েশা আক্তার, শ্যালক সানী ও দুলাভাই শামীম হোসেন। ভুক্তভোগী জুয়েলের বাবা শহীজল মাঝি বাদী হয়ে আলেয়া ও তার ছেলে আওলাদসহ ৬ জনের নামে ৯ মে লক্ষ্মীপুর জজ আদালতে মামলা করেছেন।
শনিবার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মুনসুর আহমেদ দুলাল। তিনি জানান, আদালত মামলা আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) নোয়াখালী কার্যালয়কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ৬ মাস আগে চরমার্টিনে ভাই শহীজলের বাড়িতে বেড়াতে আসেন আলেয়া। তিনি চলে যাওয়ার কিছুদিন পর বেড়াতে আসেন তার ছেলে আওলাদ। তখন শহীজল জানতে পারেন, আওলাদ পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে। এতে বোনের আবদারে শহীজল পাত্রী দেখে লক্ষ্মীপুরেই আওলাদকে দ্বিতীয় বিয়ে করান।
এক পর্যায়ে আলেয়া জানান, আওলাদের প্রথম শ্বশুর তাকে সিঙ্গাপুরের একটি ভিসা দিয়েছেন। ২-৩ দিনের মধ্যে সিঙ্গাপুর না গেলে ভিসা বাতিল হয়ে যাবে।
এরপর দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিবারের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা নিয়ে পরদিন সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে মামার বাড়ি থেকে বের হন আওলাদ। এর একদিন পর শহীজলকে ফোন করে সিঙ্গাপুর পৌঁছানোর কথা জানান তিনি। পরে শহীজলের ছেলে জুয়েলকে সিঙ্গাপুর নেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা দাবি করেন আলেয়া। দর কষাকষির এক পর্যায়ে শহীজল তাকে চার লাখ টাকা দিতে রাজি হন। গত ২৯ এপ্রিল সিঙ্গাপুরের ফ্লাইট ধরার উদ্দেশ্যে নগদ ৪ লাখ টাকাসহ বোন আর ছেলেকে নিয়ে ঢাকা বিমানবন্দরে যান শহীজল মাঝি। বিমানবন্দরে যাওয়ার পর আলেয়া বেগম টাকা নিয়ে জুয়েলকে উড়োজাহাজে তুলে দেন।
জুয়েলের অভিযোগ, ঘণ্টাখানেক পর উড়োজাহাজটি চট্টগ্রাম নামে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে তাকে একটি হোটেল কক্ষে নিয়ে অস্ত্র দেখিয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়। পরে তিনি কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোলেমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
Leave a Reply