IPL ের সকল খেলা লাইভ দেখু'ন এই লিংকে rtnbd.net/live
স্টাফ রিপোর্টার: তালেবানের শীর্ষস্থানীয় নেতা মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদার-এর সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৩ মার্চ মঙ্গলবার ফোনে কথা হয় দুই নেতার। কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি স্বাক্ষরের তিন দিনের মাথায় এ ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হলো। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।
১৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে আফগানিস্তানে তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দৃশ্যত এই দীর্ঘ সময়ে তালেবানের সঙ্গে কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টের এটাই প্রথম সরাসরি যোগাযোগ। ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলা মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদার দলটির শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা বলে জানা গেছে।সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আজ তালেবান নেতার সঙ্গে কথা বলেছি। ভালো আলোচনা হয়েছে। আমরা কোনও সহিংসতা দেখতে চাই না। এর বিরুদ্ধে আমরা একমত।’
কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় তালেবানের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদার। আলোচনা প্রক্রিয়াতেও তার তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা ছিল। ওই আলোচনার প্রেক্ষিতেই ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনের সঙ্গে বহুল প্রতীক্ষিত চুক্তিতে পৌঁছায় তালেবান। দোহায় তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এ চুক্তিতে ইতোমধ্যেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে অনেকে। তাদের প্রত্যাশা, এর মধ্য দিয়েছে যদি প্রায় দুই দশক ধরে চলা রক্তক্ষয়ী একটি যুদ্ধের অবসান হয়!
যুক্তরাষ্ট্র বা তালেবানের কোনও কর্মকর্তা অবশ্য এখনও পর্যন্ত ওই চুক্তিকে ‘শান্তি চুক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেননি। আর আফগান সরকারকে অবৈধ ও ‘দখলদার শক্তির তাঁবেদার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এই চুক্তি স্বাক্ষরের যাবতীয় প্রক্রিয়া থেকে তাদের বাইরে রেখেছে তালেবান। ফলে চুক্তির পর তালেবান এখন কোন পথে হাঁটবে সে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। বলা চলে ইতোমধ্যেই এক ধরনের অনানুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। তবে সহসাই দেশটির স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার আশা কতটা করা যাবে এখনও তা বলার সময় আসেনি।১৮ বছর ধরে চলছে এই আফগান যুদ্ধ। বছরের পর বছর ধরে তালেবান ক্রমে একটু একটু করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। অনেক জায়গায় তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে স্থানীয় নির্বাচনে। তবে দেশটির শহর অঞ্চলগুলো এখনও তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান নেতৃত্ব উভয় পক্ষই বুঝতে পারছে যে, কোনও পক্ষই নিরঙ্কুশ সামরিক বিজয় লাভ করতে পারছে না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে চান। এখানে যুক্তরাষ্ট্র যে ছাড় দিয়েছে, মানে যার জন্য চুক্তিটি শেষ পর্যন্ত সম্ভব হলো, তা হচ্ছে ২০১৮ সালে নেওয়া নতুন মার্কিন নীতি। তার আগ পর্যন্ত ওয়াশিংটন মনে করতো তালেবানকে আফগান সরকারের সঙ্গেই প্রথম আলোচনা শুরু করতে হবে। কিন্তু মার্কিন সমর্থিত আফগান সরকারকে তালেবান কখনোই বৈধ কর্তৃপক্ষ হিসেবে মেনে নেয়নি। ফলে এক পর্যায়ে আগের অবস্থান থেকে সরে আসে ওয়াশিংটন। তারা সরাসরি তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসে। তালেবানের প্রধান আপত্তি আফগানিস্তানে বিদেশি বাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। সেই আলোচনা শেষ পর্যন্ত চুক্তিতে গড়ায়।
কোনও কোনও বিশ্লেষক যদিও সতর্ক করেছেন এই বলে যে, এখনও পর্যন্ত তালেবানকে দেখে মনে হচ্ছে না যে তারা কোনও ছাড় দেবে। চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টিকে তারা নিজেদের বিজয় হিসেবেই দেখছে। যদিও তালেবান যে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও বৈধতা চায়, সেটা ইতোমধ্যেই পরিষ্কার হয়ে গেছে। চুক্তির সময় কাতারের রাজধানী দোহায় যে উৎসবের আমেজ দেখা গেছে তাতে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। ওই চুক্তির তিন দিনের মাথায় ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপ দৃশ্যত দলটির জন্য অর্জনই বটে। সূত্র: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, বিবিসি। সূত্র বাংলা ট্রিবিউন