মুখোমুখি চীন ও ভারতের সৈন্যরা, তুমুল যুদ্ধের আশঙ্কা

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

ভারত-চীন সীমান্তে চলমান উ’ত্তেজনার মধ্যে বেইজিংয়ের সমরসজ্জা বৃদ্ধি পেয়েছে। সীমান্তে চীনা বাহিনী এরই মধ্যে নতুন করে ১১৪টি বাঙ্কার নির্মাণ করেছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, চীন গালওয়ান অঞ্চল এবং প্যাংগং এলাকায় বাঙ্কার তৈরি করে বিতর্কিত এলাকায় ভারতীয় সেনা প্রবেশের পথ বন্ধ করছে।

পূর্ব লাদাখে সীমান্তরেখার বেশ কিছু অঞ্চলে ভারত ও চীনের সেনা সদস্যরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। ২০১৭ সালে ডোকলাম সংকটের পর এবারই সীমান্তে দু’দেশের সবচেয়ে বড় সেনা মোতায়েনের ইঙ্গিত মিলেছে। প্যানগং সো ও গালওয়ান উপত্যকায় শক্তি বাড়িয়েছে ভারতীয় সেনারা। ওই দুই অঞ্চলে পাঁচ হাজার চীনের সেনাও মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়েছে, চীনা সৈন্যরা এবার ঘাঁটি তৈরি করেছে লাদাখের গালওয়ান ভ্যালির মতো সম্পূর্ণ নতুন জায়গাতেও, যেখানে আগে কোনও বিরোধের ইতিহাস ছিল না।ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বিভিন্ন রিপোর্ট অনুসারে, গত দু-তিনসপ্তাহের ভেতর চীনা সেনাবাহিনী এই ‘এলএলসি’ অন্তত চার জায়গায় অতিক্রম করে অবস্থান নিয়েছে। জায়গাগুলো হল লাদাখের প্যাংগং সো বা প্যাংগং লেক, গালওয়ান নালা ও ডেমচক ও সিকিমের নাকু লা

ভারতের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অজয় শুক্লা তার ব্লগে লিখেছেন, এই প্রথম সমগ্র গালওয়ান ভ্যালিকেই চীন নিজেদের বলে দাবি করছে। তার কথায়, ‘এই ইনট্রুশন-গুলো কিন্তু হয়েছে বিরাট একটা জায়গা জুড়ে। উত্তর লাদাখের গালওয়ান ভ্যালি থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ লাদাখের ডেমচক – আর সেখান থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে সিকিমের নাকু লা পাস পর্যন্ত। যা থেকে বোঝা যায় এই গোটা অভিযানটার পরিকল্পনা হয়েছে রাজনৈতিকভাবে খুবই উঁচু মহলে, এমন নয় যে স্থানীয় কমান্ডাররা তাদের ইচ্ছেমতো এগুলো করছেন।’

শুধু অবস্থান নেওয়াই নয়, গত কয়েকদিনের মধ্যে চীনা সৈন্যদের সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীর বেশ কয়েক দফা মুখোমুখি সংঘর্ষও হয়েছে। দুপক্ষেই বেশ কয়েক ডজন সৈন্য আ’হত হয়েছেন, এমন কী কয়েকজন ভারতীয় সেনাকে চীন বেশ কিছুক্ষণ আটকে রেখেছিল বলেও রিপোর্ট হয়েছে – যদিও ভারত পরে তা অস্বীকার করেছে।

গত সপ্তাহেই লাদাখে এসেছিলেন ভারতের সেনাপ্রধান মুকুন্দ নারভানে। পুরো পরিস্থিতিটি খতিয়ে দেখেন তিনি। সিকিম সীমান্তে ভারত-চীন সংঘর্ষ হয়। অন্যদিকে গত ৫-৬ মার্চ নাগাদ প্যাঙ্গং লেকের ফিঙ্গার ফোরের কাছে ভারত-চীন সেনাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এর পরই উ’ত্তেজনা ছড়ায় অন্যত্র।চীনে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত অশোক কান্থা মনে করেন, প্রত্যেক গ্রীষ্মে দুদেশের সেনাদের মধ্যে যেমন হাতাহাতি বা মারামারি হয় তার চেয়ে এবারের সংঘাত কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা।

তিনি বলছিলেন, ‘প্রথমত চীন এবার অনেক বেশি আগ্রাসী, দ্বিতীয়ত একসঙ্গে অনেকগুলো জায়গায় হা’মলা চালাচ্ছে – আর তা ছাড়া গালওয়ান ভ্যালিতে এলএসি-র নতুন ব্যাখ্যা এনে নতুন একটা ফ্রন্ট খুলতে চাইছে। এর কারণ কী বলা মুশকিল, তবে হতে পারে তারা বিতর্কিত সীমানার ওপর নিজেদের দাবি জোরেশোরে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। আবার এটা তাদের প্রেসার ট্যাকটিক্সের অংশও হতে পারে, যার মাধ্যমে তারা মনে করিয়ে দিতে চায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা ইস্যুতে বা এমন কী কভিডের প্রশ্নেও ভারত যেন চীনের সংবেদনশীলতা খেয়াল রাখে।’

বছর তিনেক আগে ডোকলাম ভ্যালিতে চীন ও ভারতের সেনারা মুখোমুখি অবস্থানে ছিল দুমাসেরও বেশি সময় ধরে। লাদাখের এই সামরিক উ’ত্তেজনা বহরে অনেক বেশি এবং এটাও খুব সহজে মিটবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন না।

Check Also

এরদোগানবিরোধী প্রচারণায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম ইকোনোমিস্ট

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ১০ দিন আগে প্রকাশিত ব্রিটিশ সাপ্তাহিক পত্রিকা ইকোনোমিস্ট কভার পেজসহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *