ঘুষ নিতে অফিসেই রাত জেগে অপেক্ষা, ভারতে সিবিআইর হাতে গ্রে’প্তার রেল কর্মকর্তা

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

০.৫০ শতাংশ ঘুষ না দিলে বিল পাস হবে না। রেলের সিভিল কন্ট্রাক্টরকে সাফ জানিয়ে দেন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চিফ অফিস সুপার। সেই শতকরা হিসেবে দু,এক টাকা নয়, রীতিমতো ১১,৫০০ টাকা গুনে গুনে দিতে হবে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অফিস সুপারের হাতে। কন্ট্রাক্টরের থেকে বেআইনি কাটমানি নিতে অফিসে রাত্রি জাগরণ সিওএস-এর। এভাবেই টাকা আদায়ের জন্য বহু রাত অফিসে কাটান তিনি। অফিসে ঘুমনোর জন্য রীতিমত পালঙ্ক পেতে রেখেছেন। আর এসব করতে গিয়েই সিবিআইয়ের হাতেনাতে ধরা পড়ে গেলেন কীর্তিমান অফিসার।

[৩] ঘুষ নেওয়ার নেশায় বুধবার সিওএস কন্ট্রাক্টরকে জানান, ”যত রাত হোক টাকা নিয়ে এসো, আমি অফিসে থাকব। টাকা না আনলে খারাপ কাজের অভিযোগ তুলে জরিমানা ও লাইসেন্স বাতিল করে দেব।” এই হুঁশিয়ারিতে বীতশ্রদ্ধ কন্ট্রাক্টর বেণিপ্রসাদ মিনা জানিয়ে দেন, তিনি টাকা নিয়ে আসবেন। গভীর রাতে পশ্চিম-মধ্য রেলের গঙ্গাপুরে সহকারী ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসে এই ঘুষ নিতে গিয়ে সিবিআই-এর হাতে ধরা পড়ে গেলেন চিফ অফিস সুপার জলন্ধর যোগী। রাত দেড়টা নাগাদ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসাররা তাকে জয়পুরে নিয়ে যায়।

[৪] রেলের সিভিল ঠিকাদার সিবিআইকে অভিযোগ করেন, হিন্দোল, ডুমরিয়া, পিলদা তিনি চালা মেরামতির কাজ করেন। চূড়ান্ত বিল পাস হয়ে গিয়েছিল। তা সত্বেও সিওএস ০.৫০ শতাংশ না দিলে বিল পাস করবেন না বরং হুমকি দেন লাইসেন্স বাতিল করা ও কাজ খারাপের অভিযোগ তুলে জরিমানা করার। লকডাউনে চূড়ান্ত ক্ষতির পর এই হুঁশিয়ারি মেনে নিতে পারেননি তিনি। এরপরই সিবিআই-এর কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। গভীর রাতে ঠিকাদার-সহ সিবিআই অধিকরিকরা গঙ্গাপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসে হানা দেয়। ঠিকাদারের থেকে টাকা নেওয়ার সময় সরাসরি তাকে গ্রে’প্তার করে তদন্তকারী দলটি।

[৫] আগেও এই ধরনের ঘুষ নিতে গিয়ে সিবিআই-এর হাতে ধরা পড়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ধরা পড়ার পর জলন্ধর অনুরোধে জানিয়ে ছিলেন, দেড় মাস বাদে তাঁর অবসর গ্রহণ করার কথা। জমানো টাকা পেয়ে দুই অবিবাহিত মেয়ের বিয়ে দেবেন ভেবেছিলেন। সব পরিকল্পনা শেষ হয়ে যাবে। যদিও তদন্তকারীরা সে কথার গুরুত্ব না দিয়ে ধরে নিয়ে যান।

[৬] ঠিকাদারদের সংগঠনের অভিযোগ, পুলিশকে দশ টাকা নিতে দেখলে রে রে করে ওঠে সবাই। রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এক্ষেত্রে ঘুঘুর বাসা। কাজ করেও উপর থেকে নিচুতলার সবাইকে টাকা দিতে হয়। না হলে বিল পাস হয় না। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, কাটমানিতে সব চলে গেলে ভালো কাজ হবে কীভাবে? লকডাউনেও ইঞ্জিনিয়ারিং কর্মীরা অফিসে এসেছেন শুধু বেআইনি টাস্ক সংগ্রহ করতে। শুধু গঙ্গাপুরে নয়, এই বেআইনি লেনদেন চলছে ভারতীয় রেলের সর্বত্র। এইসব কর্মীদের নামে-বেনামে বহু সম্পদ। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উপর নজরদারির আবেদন করেছেন তাঁরা।সংবাদ প্রতিদিন, যুগান্তর

Check Also

এরদোগানবিরোধী প্রচারণায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম ইকোনোমিস্ট

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ১০ দিন আগে প্রকাশিত ব্রিটিশ সাপ্তাহিক পত্রিকা ইকোনোমিস্ট কভার পেজসহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *