IPL ের সকল খেলা লাইভ দেখু'ন এই লিংকে rtnbd.net/live
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলনকে ওএসডি করা হয়েছে। আজ ৬ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে এই তথ্য জানানো হয়। মাহবুব কবির মিলন নিজেও সোশ্যাল সাইটে এক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রেলওয়ের যাত্রীসাধারণের কাছে মাহবুব কবির মিলন বেশ জনপ্রিয় একটি নাম। রেলকে জনবান্ধব করতে তিনি বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। এর মাঝে আছে, টিকিট কাটতে এনআইডি বাধ্যতামূলক করা, অনলাইনে টিকিটের টাকা রিফান্ড করা, রেলসেবা অ্যাপের মাধ্যমে ফটো/ভিডিও যুক্ত করে তাৎক্ষণিত অভিযোগ প্রদানের ব্যবস্থা ইত্যাদি।
এদিকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলনকে ওএসডি করায় সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় বইছে।
মাহবুব কবির মিলন তার ভেরিফাইড ফেসবুকে ‘ওএসডি হলাম’ লিখে আদেশের কপিটি শেয়ারের মাত্র ১ ঘন্টার মধ্যে ১১ হাজারের অধিক মানুষ প্রতিক্রিয়া দেখায়। এ সময় ২ হাজার ৬০০টি মন্তব্য ও ২ হাজার ২০০ জন শেয়ার করে।
অধিকাংশ পাঠকই ওএসডির আদেশে ক্ষোভ, হতাশা প্রকাশ করে ওএসডির আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানায়।
আব্দুল মোমিন রনি ফেসবুকে লিখেছেন, মাহবুব কবির মিলনের ওএসডি প্রত্যাহার করা হোক। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, যে বাংলাদেশের কথা আমরা বলি এই মিলন ভাইরা যদি আজ হেরে যায় তা আর কখনোই হবেনা।
শাহাদাত উদ্রাজি লিখেছেন, ঘটনা শেয়ার না করে পারা যাচ্ছে না, ‘আমি যে বার বার বলি, সুশাসন। হ্যাঁ, এই হচ্ছে সেই সুশাসন! আমরা যারা অনলাইনে সারা দিন পড়ে থাকি, আমরা মানুষ চিনি, কে কোথায় কি করছে তাও আমাদের জানা। আমাদের দেশে বৃহত্তর পরিসরে ভাল কাজ করতে গেলে যে কি পরিমান বাধা মোকাবেলা করতে হয়, এই হচ্ছে তার প্রমান! নিন, আপনাদের সুশাসন। মিলব সাহেবকে আমরা সবাই সৎ হিসাবেই চিনি, তিনি যেখানেই কাজ করেছেন, সততার পরিচয় দিয়েছেন। দিন কয়েক আগে চেষ্টা করে বিকাশের মাল্টি ডিভাইস লগিং (এটা প্রতারনার একটা দারুন দিক ছিলো) বন্ধ করেছেন, রেলের এক মোবাইলে অনেক টিকেট কাঁটা বন্ধ করেছেন, নিজে যাত্রী চেক করে টিকেটব্লেকার ধরার চেষ্টা করেছেন এবং এর আগে খাদ্য ভেজাল রোধ সহ অনেক জায়গাতে ভাল কাজ করেছেন। পরে হয়ত কনফিডেন্ট লেভেল বাড়াতে তিনি প্রধানমন্ত্রী সহ নানান জায়গায় ১০ জনের একটা দল করে দূর্নীতিতে থামাতে চাইছিলেন! অথচ আজ তিনি ‘ওএসডি’ হবার চিঠি পেলেন, মানে ঘরে বসে বেতন নাও তবুও আর নুতন কোন চিন্তা করো না! জ্বি, এই হচ্ছে আমাদের সুশাসন!’
প্রিন্স লিখেছেন, ‘১০ জন অফিসারকে নিয়ে দেশটাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চাওয়াটা হচ্ছে অন্যায়। এদেশের ভাল কিছু আর হবে না। ভালো কিছু যা হওয়ার তা সেই ‘৫২, ‘৭১ এই হয়েছে। কোনও রকম খেয়ে পরে ৬০/৭০ বছর বেঁচে থাকলেই এই দেশের কাছে থেকে আশা শেষ। এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা বোকামী। ইতালি প্রবাসী সেই ভাইয়ের কথা আজ মনে পড়ছে খুব।’
ইব্রাহিম মোহাম্মদ লিখেছেন, মাহবুব কবির মিলন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একজন ব্যতিক্রমী, সত্য ও কর্মনিষ্ঠ কর্মকর্তা। যে দফতরে কাজ করেন, পরিবর্তনের উদ্যোগ নেন। কিছু পরিবর্তন করেও ফেলেন। সম্প্রতি রেল মন্ত্রণালয়ে বদলি হয়ে, ওখানেও পরিবর্তনের সূচনা করছিলেন, দেখে আমরাও আশ্বস্ত হচ্ছিলাম, এবার কিছু কাজ হবে। আমরা দেশব্যাপী রেলভ্রমণ করতে পারবো বিঘ্নহীন। ‘আশার গুড়ে বালি’ বলে বাংলায় একটি কথা আছে, খেয়াল পড়লো। তিনি ফেসবুকে জানালেন, তাঁকে ‘বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা’ করা হয়েছে। তিনি বললেন ‘আলহামদুলিল্লাহ’।
মাহমুদ হাসান আরিফ বলছেন, ‘দুষ্টরে লালন করতে হবে আর ভালোরে করতে হবে দমন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন ১০ জন সৎ অফিসার চেয়ে ফেসবুকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, যদি পান তবে ৩ মাসের মধ্যে তাঁর মন্ত্রণালয় দুর্নীতিমুক্ত করতে পারবেন। এর পুরস্কার হিসেবে তাঁকে ওএসডি করা হয়েছে।’
দেশের ফেসবুক নিউজফিড এখন মাহবুব কবির মিলনের পোস্ট দিয়ে ভর্তি করে রেখেছেন রেলভক্ত ও সাধারণ জনতা। এছাড়াও বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপেও অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।