IPL ের সকল খেলা লাইভ দেখু'ন এই লিংকে rtnbd.net/live
অনিয়ম-দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ সত্ত্বেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সহিদুল আলমকে পদোন্নতি দিয়ে ঠাকুরগাঁও পাউবো অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী করা হয়েছে।
সোমবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসচিব (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুল হক স্বাক্ষরিত এক পত্রে নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সহিদুল আলমের পদোন্নতির আদেশ দেয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী আকবর খান সোহেলসহ রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ২০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীরা গত ১০ জুন বিস্তারিত সব তথ্যপ্রমাণসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সহিদুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন পাউবো ও দুদকের চেয়ারম্যানের কাছে।
জাল ও ভুয়া সনদে কোটি কোটি টাকার কাজ সাজিদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে প্রদান ছাড়াও নদী ও খালখননে বিস্তর দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ করেন তারা।
এছাড়াও অভিযোগনামায় নদী থেকে উত্তোলিত কোটি কোটি টাকার পলি ও বালু বিক্রির মাধ্যমে বিপুল টাকা লোপাটেরও অভিযোগ দেয়া হয় বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণসহ।
এ বিষয়ে গত ২১ জুন দৈনিক যুগান্তরে জাল সনদে এক ঠিকাদারকে কোটি কোটি টাকার কাজ, চাঁপাই পাউবোর দুর্নীতির অভিযোগ দুদকে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এদিকে দৈনিক যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশের পর বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়া পাউবোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তারেক আব্দুল আল ফাইয়াজকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি কয়েক দফায় অভিযোগকারীদের নিজ দফতরে ডেকে সাক্ষ্য ও প্রমাণাদি গ্রহণ করে। তদন্ত কমিটি গত ১১ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পাউবোর সদর দফতরে।
তদন্তের ফলাফল জানতে চাইলে গত মঙ্গলবার কমিটির প্রধান বগুড়া পাউবোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তারেক আল ফাইয়াজ জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না।
এদিকে যার বিরুদ্ধে এত দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই পদোন্নতি দেয়া প্রসঙ্গে উপসচিব (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুল হক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ বিষয়ে পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও দায়িত্ব নিয়ে কথা বলতে অস্বীকার করেছেন।
অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভুক্তভোগী ও অভিযোগকারী বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা বলছেন, নদীভাঙনপ্রবণ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় পাউবোর এই কর্মকর্তা গত আড়াই বছরে কোটি কোটি টাকার কাজ দেখালেও বাস্তবে অধিকাংশ বরাদ্দ লোপাট করেছেন। একজন ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেই ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হয়ে কাজ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এছাড়াও ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি কাজের কথা বলেও লোপাট করেছেন কয়েক কোটি টাকা। এসব করে নিজের এলাকায় গড়ে তুলেছেন বিপুল অবৈধ সম্পদ। নির্বাহী প্রকৌশলীর দুর্নীতির সব তথ্য প্রমাণ তারা তদন্ত কমিটিকে দিয়েছেন যার মধ্যে কোনো ফাঁক নেই। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল হয়ে থাকলে অভিযোগকারী হিসেবে তাদেরও জানানোর নিয়ম রয়েছে। কিন্তু কমিটি গোপনে এই প্রতিবেদন দিয়েছেন।
তারা আরও বলেন, সৈয়দ সহিদুল আলমকে উচ্চপদে পদোন্নতি দেয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হল বাংলাদেশে দুর্নীতি করলে কোনো বিচার হয় না। কাউকে শাস্তিও পেতে হয় না। আর এজন্যই সৈয়দ সহিদুল আলমদের মতো কর্মকর্তারা নির্ভয়ে দুর্নীতি করে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপাটের সাহস দেখিয়েছেন।