IPL ের সকল খেলা লাইভ দেখু'ন এই লিংকে rtnbd.net/live
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নটরডেম কলেজে লেখাপড়া করায় ‘খ্রিস্টান’ অপবাদ দিয়ে জুয়েল খান নামে এক মেধাবী ছাত্রের পরিবারকে সমাজচ্যুত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত চার মাস ধরে সামাজচ্যুত করে রাখা হয়েছে পরিবারটিকে। ওই পরিবারের কাউকে সমাজের কারো সাথে মিশতে দেওয়া হয় না। সমাজের সবাইকেও ওই পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে নিষেধ করা হয়েছে।
জানা গেছে, জুয়েলের পরিবারের কেউ সমাজের অন্য কোনো লোকের সাথে মেলামেশা করার চেষ্টা করলে তাদের বাড়িঘর ভেঙে এলাকা ছাড়া করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঈদুল আযহায় ওই পরিবারটিকে সামাজিকভাবে পশু কুরবানিতেও অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। অমানবিক এ ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তারফপুর ইউনিয়নের পাথালিয়াপাড়া গ্রামে।
মিজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সায়েদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, গ্রামের কয়েকজন মাতব্বর মিলে জুয়েলের পরিবারকে খ্রিস্টান অপবাদ দিয়ে সমাজচ্যুত করার ঘোষণা দেয়। বিষয়টি খুবই অমানবিক। পুলিশি তদন্তে এর সত্যতা রয়েছে।
জুয়েল খান উপজেলার তরফপুর পাথালিয়াপাড়া গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে।
জুয়েল জানান, তিনি নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় মাস্টার্স সম্পন্ন করেছে। ৪০তম বিসিএস-এ লিখিত পরীক্ষায়ও অংশ নিয়েছেন তিনি।
এ ঘটনায় উভয়পক্ষই থানা ও কোর্টে মা’মলা করেছেন বলে জানা গেছে।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, বাড়ির সীমানা নিয়ে জুয়েল খানের পরিবারের সঙ্গে তার চাচাতো ভাই আবদুর রশিদ খানের ছেলে শরিফুল ইসলামের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধের জের ধরে ১ মে শরিফুল ইসলামের লোকজন লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে জুয়েলদের বাড়িতে এসে পরিবারের সদস্যদের মারপিট করে। এ ঘটনার নেতৃত্বে ছিলেন শরিফুল ইসলাম, আবদুল বাছেদ মিয়া, রমজান আলী, আবদুল লতিফ, তারিকুল ইসলাম ও লিটু আনাম। এ সময় একই গ্রামের শামসুল হকের ছেলে মাসুদ জুয়েলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তুই খ্রিস্টান কলেজে (ঢাকার নটরডেম কলেজ) লেখাপড়া করেছিস। এ ছাড়া তুই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় লেখাপড়া করেছিস। নটরডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা বাংলায় লেখাপড়া করে তারা নাস্তিক। তুইও নাস্তিক।’ এ সময় নাস্তিকের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুমকি দেন। এ ছাড়া জুয়েলের পরিবারকে সমাজচ্যুত করার ঘোষণা দেন তারা।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, জুয়েল খান নটরডেম কলেজে লেখাপড়া করার কারণে ওই গ্রামের কতিপয় মাতাব্বর তাকে খ্রিস্টান অপবাদ দিয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।
ওসি মো. সায়েদুর রহমান বলেন, পুলিশি তদন্তে এর সত্যতা রয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।