ভিপি নুর, ধ’র্ষণ এবং আট মাস

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

শামীমুল হক |
লাজ, লজ্জা, ভয়/ এ তিন থাকতে নয়। এ উপমার সৃষ্টি কিভাবে? কাদের জন্য? কদিন ধরে বিষয়টি ভাবাচ্ছে। সত্যিই কি মানুষ এখন মানুষ আছে? কদিন ধরে দেশে আলোচনার বিষয় একটি ধ’র্ষণ মা’মলা। ধ’র্ষণ হওয়ার আট মাস পর ধর্ষিতার মনে পড়েছে তিনি ধ’র্ষণের শিকার। আর যায় কোথায়?

থানায় মা’মলা। নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। কারণ এ মা’মলার আসা’মি যে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের সাবেক ভিপি নুর। তাও আবার যেন তেন আসা’মি নন তিনি। ধর্ষিতা তার কাছে বিচার চেয়েছিলেন। নুরও বলেছিলেন বিচার করে দেবেন। বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ করে দেবেন। এটা করেননি নুর। তাই ধ’র্ষণে সহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ওই ধর্ষিতা ফের ধর্ষিত হন একমাস পর। এখানে ধর্ষক আরেকজন। তাও আবার লঞ্চে আরামে আয়েশে ধ’র্ষণ করেছে তাকে। এখানেও নুর আসা’মি।

এ নিয়ে মা’মলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করবে। আসল বিষয় বেরিয়ে আসবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- মা’মলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিপি নুরকে আটক ও নানা নাটকীয় ঘটনা কেন? আর ধর্ষিতা সাত, আট মাস আগে ধ’র্ষণের শিকার হয়েছেন। আর এটা টের পেলেন সাত, আট মাস পর! কোথায় আছি আমরা। মূল বিষয় যেটা আলোচিত হচ্ছে, ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়কের সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুই জনের সম্মতিতে একান্তে সময় কাটিয়েছেন তারা। হয়তো তাদের ভাবনায় বিয়ের বিষয়টিও ছিল। কিন্তু ছেলেটি প্রতারণা করেছে মেয়েটির সঙ্গে। এ প্রতারণার অবশ্যই বিচার হওয়া উচিৎ। আরও চাউর হয়েছে মেয়েটি ওই ছেলেকে ছেড়ে আরেকজনের সঙ্গে প্রেমে জড়ান। সেখানেও সম্মতিতে একান্ত সময় কাটান। এখানেও মেয়েটি প্রতারিত হয়েছে। আর তাই ধ’র্ষণ মা’মলা টুকে দিয়েছে। ইতিমধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে আহ্বায়ককে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটিও। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়?

প্রশ্ন হলো- মানুষ কেন লাজ-লজ্জাহীনভাবে অবিবেচকের মতো কাজ করে যাচ্ছে প্রকাশ্যে। তাহলে মানুষ কি মানুষ নেই! তারা কি আদিম যুগে ফিরে যাচ্ছে? সে সময় মানুষের লজ্জা ছিল না। দিগম্বর হয়ে থাকতো নারী-পুরুষ। লজ্জা ঢাকতে হবে এমন ভাবনাও ছিল না। বস্তুও ছিল না। ধীরে ধীরে মানুষ লজ্জা উপলব্ধি করতে শিখেছে। গাছের লতা-পাতা দিয়ে লজ্জাস্থান ঢাকতে শুরু করে। এরপর ধীরে ধীরে বিজ্ঞানের ছোঁয়া লাগতে থাকে পৃথিবীতে। এখন মানুষ বিজ্ঞানের চরম শিখরে পৌঁছেছে। আব্রু ঢাকতে কত যে পন্থা এখন। নানা ডিজাইনের, নানা রংয়ের বস্ত্র এখন ঘরে ঘরে। এখন মানুষ আব্রু ঢাকে ঠিকই, কিন্তু লাজ শরম যে হারিয়ে যাচ্ছে দিন দিন। দুর্নীতি করে একের পর এক বিল্ডিং-বাড়ি করছে। গাড়ি হাঁকাচ্ছে। বড় গলায় আবার বলছে, আমার প্রতিদিনের আয় হাজার হাজার টাকা। কে না জানে, টাকা ছাড়া দেশে কিছু হয় না। কিছু মানুষ আছে টাকার ধান্ধায়। একেবারে লাজ-লজ্জা ভুলে গিয়ে তারা ধান্ধায় নেমে পড়ে। এতে মানুষ মরলে মরুক, তাতে কি?

যৌতুক দেয়া- নেয়া চলছে প্রকাশ্যে। গর্ব করে পিতারা বলে, আমার ছেলে শ্বশুর বাড়ি থেকে ডায়মন্ডের আংটি পেয়েছে ১১টি, হীরার চেইন, স্বর্ণের চেইন পেয়েছে ২৫টি, প্রাইভেট কারটির রং কত সুন্দর। এমন রংয়ের গাড়ি পাওয়া রেয়ার। আর ফার্নিচার যা দিয়েছে তা রাখবো কোথায় এনিয়ে ভাবছি। লাজ-লজ্জার মাথা খেয়েছে যেন। হায়রে মানুষ। আসলে মানুষের সংখ্যা দিন দিন সমাজ  থেকে কমে যাচ্ছে। মনুষ্যত্ববোধ লোপ পাচ্ছে। যে কারণে সমাজে বাড়ছে নৈরাজ্য, অনাচার। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও কেন পিতা-মাতাকে বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে হচ্ছে? এসব সন্তানকে কি বলে ডাকলে পিতা-মাতারা শান্তি পাবে। প্রকাশ্যে অবলীলায় নারী সম্ভ্রম হারাচ্ছে। ইভটিজিং হচ্ছে অহরহ। আবার কোন নারীর মনে পড়ে আট মাস আগে তিনি ধর্ষিত হয়েছিলেন। এসব কিসের আলামত?

Check Also

এরদোগানবিরোধী প্রচারণায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম ইকোনোমিস্ট

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ১০ দিন আগে প্রকাশিত ব্রিটিশ সাপ্তাহিক পত্রিকা ইকোনোমিস্ট কভার পেজসহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *