ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ব্যবসায়ীর ওপর হামলা, পুলিশের গুলি

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে রাজধানীর গুলিস্তানের জাকের সুপার মার্কেটের সভাপতি ফিরোজ আহমেদের (৫৫) ওপর হামলা চালিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আউয়াল হোসেনের অনুসারীরা। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন ফিরোজ আহমেদ। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
একই ঘটনায় যুবলীগের এক কর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও কাউকে গ্রেপ্তার করেনি বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ।

আজকের পত্রিকা অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে জাকের মার্কেটের পার্কিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। জাকের মার্কেট থেকে সারা দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মালপত্র কিনে শ্রমিকদের কাছে দেন। শ্রমিকেরা চালান নিয়ে এসব মালপত্র মার্কেটের পার্কিংয়ে জমা করে ঠিকানা অনুযায়ী গাড়িতে তুলে দেন। তবে হঠাৎ আজ বিকেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান পার্কিংয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালান। এ সময় শ্রমিকেরা তাঁদের মালপত্র নিয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। মার্কেটে ঝামেলার কথা শুনে সভাপতি ফিরোজ আহমেদ ঘটনাস্থলে আসেন। একই সময় কাউন্সিলর আউয়ালের অনুসারীরাও সেখানে আসেন। তাঁরা এসেই ফিরোজ আহেমেদকে মারধর করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক সরদার নূর ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সামনেই আউয়ালের অনুসারীরা তাঁকে মারধর করেন। এ সময় পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তা দেখেন। আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে শ্রমিকেরা ভ্যানে তুলে হাসপাতালে নিতে চাইলে, তখন মার্কেটের সামনে বসে আরেক দফা তাঁকে মারধর করা হয়।’

প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক সরদার হামিদ মোল্লা বলেন, ‘বিভিন্ন জেলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মালপত্র আমরা গাড়িতে তুলে দেওয়ার আগে পার্কিংয়ে রাখি। কারণ, রাস্তায় রাখতে দেয় না। তা ছাড়া রাস্তায় রাখলে চুরি হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই ভেতরে রাখি। সভাপতি ফিরোজ আহমেদের অনুমতি নিয়েই আমরা পার্কিংয়ে জায়গা ব্যবহার করি। কিন্তু আজ ম্যাজিস্ট্রেট এসে উচ্ছেদ চালান, আমাদের সব মালপত্র বাজেয়াপ্ত করেন। কাউন্সিলর আউয়াল পার্কিং দখল নিতে এই কাজ করিয়েছে।’

বর্তমানে জাকের সুপার মার্কেটের পার্কিং ইজারা নিয়েছেন সভাপতি ফিরোজ আহমেদ। তবে কাউন্সিলর আউয়াল এবং তাঁর অনুসারীরা এই পার্কিং দখল নিতে চান। তাই হামলা চালিয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

জাকের মার্কেটের পাশে নগর প্লাজার মার্কেটের সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, ‘জাকের মার্কেটের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ ম্যাজিস্ট্রেটকে মালামাল বাজেয়াপ্ত না করার অনুরোধ করেন। এর কিছুক্ষণ পরেই সেখানে হাজির হন ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল আউয়াল ও যুবলীগ নেতা মাসুদসহ আরও অনেকে। কথা বলার এক পর্যায় কাউন্সিলরের লোকজন সভাপতি ফিরোজ আহমেদকে ইট দিয়ে আঘাত করতে থাকেন।’

এ বিষয়ে কাউন্সিলর আউয়াল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার কোনো অনুসারী নেই। তার ওপর কেউ হামলাও চালাইনি। ফিরোজ আহমেদ নিজেই পার্কিং দখল করে দোকান বসিয়েছে, অবৈধভাবে ভাড়া নেয়। রাইদা ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি প্রতিষ্ঠান পার্কিং ইজারা নিয়েছে, তাদের সেখানে ঢুকতে দিচ্ছে না। পাশের সব মার্কেটে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে, কেবল এই মার্কেটে কোনো ব্যবস্থা নেই। ফিরোজ আহমেদ দখল করে রেখেছে।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের সময় এখানে কিছু লোক হামলা চালিয়েছে। তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। তারা সিটি করপোরেশনের কাজে বাধা দিয়েছে।’

সভাপতির মারধরের সময় পুলিশ থাকলেও কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। পরবর্তীকালে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হলে পুলিশ শটগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

মোশাররফ হোসেন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘সভাপতি ফিরোজ আহমেদকে যখন মারধর করে, তখন পুলিশ নামাজে যেভাবে দাঁড়ায়—এইভাবে দাঁড়িয়ে ছিল। যখন সব শ্রমিক হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে বলেন, তখন শটগানের ফাঁকা গুলি করেন।’

এদিকে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, ‘পার্কিং দখল উচ্ছেদ করতে এসে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মালামাল জব্দ করেছিলেন। নিলামে দেওয়ার সময় সেখানে আউয়াল গ্রুপ ও ফিরোজ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে গুলির ঘটনা ঘটেছে। আমাদের থানা-পুলিশের কেউ ছিল না। সিটি করপোরেশন ডিএমপিতে রিকুইজিশন দিয়ে পুলিশ নিয়ে আসে। যা ঘটেছে সব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশেই ঘটে।’

এদিকে আহত ফিরোজ আহমেদ ও সাঈদ মুন্সীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Check Also

এরদোগানবিরোধী প্রচারণায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম ইকোনোমিস্ট

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ১০ দিন আগে প্রকাশিত ব্রিটিশ সাপ্তাহিক পত্রিকা ইকোনোমিস্ট কভার পেজসহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *