সাংবাদিক শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা হয়েছে। বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও থানায় এই মামলা দায়ের করেন সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া নামের এক ব্যক্তি।

‘পেটে ভাত না থাকলে স্বাধীনতা দিয়া কী করমু?’ শিরোনামে সংবাদ করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(২), ২৬(২), ২৯(১), ৩১(২) এবং ৩৫(২) ধারায় অভিযোগ এনে মামলাটি করা হয়। তেজগাঁও থানার মামলা নম্বর-৫৮।

যা আছে মামলার এজাহারে:

মামলার এজাহারে সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া অভিযোগ করেছেন, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি তাদের ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করে।

ওই সংবাদে দেখা যায়, একটি শিশু ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেদকের দাবি সেই শিশুটির নাম জাকির হোসেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শিশু জাকির হোসেন বলে-‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।

সামাজিক মাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায়। ওই সংবাদটি যা দেশ-বিদেশে অবস্থানরত হাজার হাজার মানুষ তাদের ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ক্রিনশটসহ শেয়ার করেন। এই ঘটনায় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের সোনালী গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে বাংলাদেশের জনগণসহ বহিঃবিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসের দিনে এই সংবাদ প্রকাশ করায় বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তি ও স্বাধীনতার অর্জন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। পরবর্তীতে ৭১ টিভির সংবাদে জানা যায়, প্রথম আলো উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা পরিচয় ও মিথ্যা উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদটি পরিবেশন করেছে। যে শিশুটির কথা প্রথম আলোর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে তার সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে। নাম পরিচয় ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

পত্রিকায় বলা হয় শিশুটির নাম জাকির হোসেন, কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই শিশুর নাম সবুজ আহমেদ। তার বাড়ী সাভার থানাধীন কুরগাঁও পাড়ায় তার বাবা একজন পেশায় রাজমিস্ত্রি, মা মুন্নী বেগমের তিন সন্তানের মধ্যে মেজো সন্তান সবুজ।

প্রথম আলোর তথ্যে বলা হয়েছে, সে দিনমজুর। কিন্তু সাত বছরের শিশু সবুজ আহমেদ প্রথম শ্রেণিতে পড়াশুনা করে এবং স্কুল শেষে মাঝে মাঝে ফুল বিক্রি করে। শামসুজ্জামানের প্রস্তুতকৃত প্রথম আলোর সংবাদে বলা হয়েছে, ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইল এর স্বাধীনতা লাগব’ প্রকৃতপক্ষে ওই শিশুটি এ ধরনের কোনো কথা বলেনি।

শিশুটি জানিয়েছে, প্রথম আলোর সাংবাদিক শিশুর হাতে ১০টাকা দিয়ে এই ছবি তুলেছে। এতে প্রমাণিত হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তী সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্যে একটি অশুভ চক্র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই মিথ্যা সংবাদ তৈরি ও পরিবেশন করে অনলাইন ও সামাজিক মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যার ফলে দেশের অভ্যান্তরে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

মহান স্বাধীনতা দিবসে এমন মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ এবং বিশ্বব্যাপী প্রচার করায় বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি ক্ষুব্ধ। এজাহার নামের আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা অনুমতি ছাড়া মিথ্যা তথ্য উপাত্তসহ মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচার আইন শৃংখলার অবনতি ঘটাবার উপক্রম ও সহায়তার অপরাধ করেছে।

উল্লেখ্য, বুধবার ভোর ৫টার দিকে আশুলিয়ায় আমবাগানের বাসা থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্য পরিচয় দিয়ে প্রথম আলোর সাভার প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

তার বিরুদ্ধে মামলা রুজুর হওয়ার পরই সাংবাদিক শামসকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

Check Also

এরদোগানবিরোধী প্রচারণায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম ইকোনোমিস্ট

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ১০ দিন আগে প্রকাশিত ব্রিটিশ সাপ্তাহিক পত্রিকা ইকোনোমিস্ট কভার পেজসহ …

16 comments

  1. সত্যের জয় ভয় দিয়ে থামানো যাবেনা,,,

  2. গুম খু'ন সন্ত্রাস লীগ এর চরিত্র কখনও বদলাবেনা 😏 কারন কয়লা ধুলেও ময়লা যায়না ✌️

  3. নিপীড়ন চালানোর জন্য সরকারের নামে মামলা দেয়া জরুরি।

  4. Shibbir Ahmed Sumon

    মামলা করা ভুল সিদ্ধান্ত hoisa

  5. মামলা তুলে নেয়া হোক। শামসের মুক্তি চাই। সে একজন সৎ সাংবাদিক।

  6. দেশের বর্তমান যেই পরিস্থিতি। অভাবের তাড়নায় মধ্যবিত্ত/নিম্নবিত্তরা কতো কি বলবে।
    শুধু অপেক্ষায় থাকেন।

  7. যে আইন মানুষের কল্যাণের কাজে আসে না সেই আইন করে কি লাভ? আমি মনে করি বাংলাদেশের রাজনীতিবিদের আইন ,সালিশ ,মানবাধিকার, নাই বলেই গুমের মত জঘন্য অপরাধ বেড়েই চলছে।যার ফলে কেউ কাকে মানছে না এবং অপরাধ করে পার পাচ্ছেন। সুতরাং এতে দেশের মান সম্মান নষ্ট হচ্ছে।আমি মনে করি ডিজিটাল আইন বাতিল করার জরুরী।ধন্যবাদ

  8. এতে দোষের কি বলেছেন ঠিকই তো বলেছেন

  9. হাঁছাইতো কইছে।

  10. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে ডিজিটাল ফাজলামোর এই ধারা আমরা চাইনা।

  11. ওই খানে যদি একটু বলতেন যে আমরা বেহেস্তে আছি তাইলে আর জেলে যাওয়া লাগতো না। সাংবাদিক হয়ে কোন যায়গায় তেল মারতে হবে তাও জানে না।🤣

  12. সত্য কথা বললে আওয়ামী লীগের গায়ে লাগে

  13. যেই আইন মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়। সেই আইন চাইনা। হয় এই আইন বাতিল করতে হবে না হয়, এর নাম দিতে হবে আওমি নিরাপত্তা আইন। যার ফলে সাধারন মানুষ বুজতে পারবে। আওমিলিগ দেশ চালায়, তারা শত অন্যায় করলেও তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবেনা। বলে এই আইনের বলে জেলেডুকিয়ে দেওয়া হবে। যার ফলে কেও কিছু বলবে না।

  14. উনি তো সত্য কথা বলেছেন আমার পেটে যদি দানা পানি দিতে না পারি তাহলে স্বাধীনতা দিয়ে কি লাভ অবিলম্বে ওনাকে মুক্তি দেওয়া হোক সত্য কথা বললে গায় জলে না

  15. Md Billal Hossan Hi

    সত্য তুলে ধরার দায়িত্ব সাংবাদিক ভাইদের নাহয় কি ভাবে জানবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *