আগে হয়েছে ডিজিটাল কারচুপি, উপনির্বাচনে হলো স্মার্ট কারচুপি

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

দলীয় সরকারের অধীন যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, তা আবারও প্রমাণ হলো গতকালের উপনির্বাচনে। আগে ডিজিটাল পদ্ধতিতে কারচুপি হয়েছে। এবার হলো স্মার্ট পদ্ধতিতে। এটা নির্বাচনে নতুন মডেল। এ নির্বাচন নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশন কী ব্যাখ্যা দেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পাঠানপাড়ায় নিজ বাসভবনে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। তাঁর পদত্যাগের কারণেই এই আসন শূন্য হয়।

উপনির্বাচন নিয়ে হারুনুর রশীদ বলেন, যেসব ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হকের পক্ষে কাজ করছিলেন, নির্বাচনের আগে তাঁদের কাছে গিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছেন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। এ ছাড়া অনেক কেন্দ্র থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনেই। তাঁদের সেটা বলা হলেও নীরব থেকেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে ভরাডুবি আঁচ করতে পেরে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউলের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করেছে, তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছে। তাঁকে রক্ষা করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি চালিয়েছে। এতে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ভোটকেন্দ্রে যাননি। শেষ মুহূর্তে এসব ঘটিয়ে কোনোমতে অল্প ব্যবধানে জিতেছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী। আওয়ামী লীগ প্রার্থী নিজের ইউনিয়ন মহারাজপুরের কোনো কেন্দ্রেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের ঢুকতে দেননি। কেন্দ্র দখল করে নিজের লোকদের কেবল ভোট দেওয়ানো হয়েছে। এ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ভোট পেয়েছেন আট হাজারের বেশি। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী পেয়েছেন মাত্র ৩০০। এটা একেবারেই অস্বাভাবিক। পাশের ইউনিয়ন বারঘরিয়াতেও প্রায় একই ঘটনা। সুন্দরপুর ও দেবীনগর ইউপির আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান কেন্দ্রের বাইরে পাহারা বসিয়ে, বিরোধী ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোট দিতে যেতে দেননি। মানুষের কাছে এসব ঘটনা স্পষ্ট হয়েছে। এভাবে জেতার মধ্যে গৌরবে কিছু নেই। বরং চরম লজ্জার। অবশ্য লজ্জা বলতে আওয়ামী লীগের কিছু নেই। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এক আবদুস সাত্তারকে (ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্বতন্ত্র প্রার্থী) নিয়েই আওয়ামী লীগ কত কাণ্ডই না ঘটাল। এটা ব্যাখ্যার দরকার নেই। দেশবাসীর কাছে সেটা সুস্পষ্ট হয়েছে।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সম্পর্কে হারুনুর রশীদ বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতেই তিনি এখন থেকে মাঠে নামবেন। এ কর্মসূচিকে বেগবান করবেন। এরপর সর্বাত্মক কর্মসূচির মাধ্যমে এ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করার বিএনপির কর্মসূচিতে নিয়োজিত থাকবেন।

হারুনুর রশীদ বলেন, গত পৌর নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করে, গোপন কক্ষে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জোর করে জিতেছেন। ওই নির্বাচনে মানুষের নিজের ভোট দিতে না পারার ক্ষোভ থেকে সামিউলের প্রতি সহানুভূতির সৃষ্টি হয়েছিল। এই নির্বাচনে তার প্রতিফলন ঘটেছে। পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চেয়ে সামিউল অনেক বেশি ভোট পেয়েছেন। বিএনপির কর্মীরা যে ভোট দিতে যায়নি ভোট পড়ার হারই তার প্রমাণ।

হারুনুর রশীদ আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষ ও যারা বিএনপির নীরব সমর্থক, যাদের আমরা চিনি না এবং আবদুল ওদুদের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের একটি অংশ সামিউলকে ভোট দিয়েছে। তা ছাড়া আমি চেয়েছি আবদুল ওদুদ ফেল করুক, এটা ঠিক।’

Check Also

আন্দোলন জমাতেই আগুনের কৌশল কিনা খতিয়ে দেখতে হবে: কাদের

আন্দোলন জমানোর জন্য বিএনপি আগুন দেয়ার কৌশল বেছে নিলো কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *