তালাকের পর একই স্বামীকে ফের বিয়ে, টাকা নিয়ে উধাও স্ত্রী

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নে বিয়ের নামে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক মাদরাসা শিক্ষিকাসহ তিনজনের নামে আদালতে মামলা করেছেন এক প্রবাসী।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে লালমনিরহাট অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-২ এ মামলাটি দায়ের করেন তিনি। পরে বিচারক আহসান হাবিব অভিযোগটি আমলে নিয়ে আদিতমারী থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

অভিযুক্ত ব্যক্তি উপজেলার সারপুকুর মসুর দৈলজোর গ্রামের আব্দুর রউফের মেয়ে আলেমা খাতুন। বাদী উপজেলার মহিষাখোচা ইউনিয়নের বারঘড়িয়া গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে কামরুজ্জামান। তিনি বর্তমানে আদিতমারী শহরের টিঅ্যান্ডটি পাড়ায় বসবাস করছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন কামরুজ্জামান লিবিয়ায় একটি বেসরকারি ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে তিনি দেশে ফেরেন। আব্দুর রউফের মেয়ে কলেজ পড়ুয়া আলেমা খাতুনকে ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি বিয়ে করেন। স্বপ্ন পূরণে স্ত্রীকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও বিএড শেষ করান। এরই মাঝে তাদের সংসারে এক ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। পরে লালমনিরহাট নেছারীয়া মাদরাসার ইবতেদায়ি শাখার সহকারী শিক্ষক পদে চাকরিও নিয়ে দেন স্ত্রীকে। তবে চাকরির পর স্ত্রীর দিন দিন আচরণ বদলে ফেলেন। নিজের নামে বাড়ি, গাড়ি ও জমি রেজিস্ট্রির দাবি জানান আলেমা খাতুন। একই সঙ্গে বৃদ্ধা শাশুড়িকেও বাড়ি থেকে সরাতে বলেন। এতে কামরুজ্জামান রাজি হননি।

২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কামরুজ্জামানকে তালাক দেন আলেমা। পরে দেড় বছর পর পুনরায় কামরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিয়ের প্রলোভন দেন। এ সময় পাঁচ বছরের সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে আলেমার প্রতারণার ফাঁদে পা দেন প্রবাসী কামরুজ্জামান। পরে ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট আলেমা খাতুন তার মাদরাসার শিক্ষক ও নিকট আত্মীয় সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়ন নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী ফয়সাল আহমেদের বাসায় কামরুজ্জামানকে ডেকে নেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সেখানে নতুন করে বিবাহ রেজিস্ট্রি বইয়ে ও একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেন তারা। পরে ওই নিকাহ রেজিস্ট্রারের বাসায় ছেলেসন্তানকে নিয়ে মাসিক ২ হাজার টাকায় ভাড়া থাকা শুরু করেন। অন্যদিকে স্বামীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে গয়না কেনেন আলেমা খাতুন। স্বামী কামরুজ্জামানকে ব্যাংকে চাকরি নিয়ে দেওয়ার কথা বলে পাঁচ লাখ টাকাও নেন তিনি। কিন্তু এর তিন মাস পর আবারও ছেলেকে কামরুজ্জামান কাছে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে ভাড়া বাসার সব আসবাবপত্র নিয়ে পালিয়ে যান আলেমা। পরে মাদরাসায় দেখা করতে গেলে তাকে গালমন্দ করে তাড়িয়ে দেন তিনি।

এদিকে খবর নিয়ে কামরুজ্জামান জানতে পারেন, আবারও করা বিয়ের তালাক না দিয়েই লালমনিরহাট পূবালী ব্যাংকের কর্মচারী রেজাউল ইসলামকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেছেন স্ত্রী আলেমা খাতুন। পরে দ্বিতীয় বিয়ের কাবিননামা ওঠাতে গেলে নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী ফয়সাল এফিডেভিটের ফটোকপি দিয়ে বিদায় করেন। তখন কামরুজ্জামান বুঝতে পারেন টাকা হাতিয়ে নিতে নিকাহ রেজিস্ট্রার ফয়সাল, ব্যাংকের কর্মচারী রেজাউলসহ তার স্ত্রী আলেমা পরিকল্পনা করে তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।

এ ঘটনায় কামরুজ্জামান বাদী হয়ে মঙ্গলবার লালমনিরহাট অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-২ এ আলেমা খাতুন, সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়ন নিকাহ রেজিস্ট্রার ফয়সাল আহম্মেদ ও পূবালী ব্যাংক কর্মচারী রেজাউলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষিকা আলেমা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আদিতমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, মামলার পর আদালত নির্দেশ দিয়েছে, বিষয়টি জেনেছি। থানায় কাগজপত্র না এলে কিছুই বলতে পারছি না।

Check Also

বিএনপি বাজারের বস্তিতে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট

রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানার পাশে বিএনপি বাজারের বস্তিতে আগুন লেগেছে। নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *