‘আমার পোলারে যারা মারছে, তাগোর বিচার না অইলে লাশ দাফন করুম না’

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

আমার পোলারে যারা মারছে, তাগোর বিচার না অইলে লাশ দাফন করুম না। টেহার অভাবে চিকিৎসা ছাড়াই আমার পোলাডা ধুঁকে-ধুঁকে মরছে।’ ছেলের মরদেহের পাশে বসে অভিযুক্তদের বিচার চেয়ে বিলাপ করছিলেন ষাটোর্ধ্ব বাবা মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন।

গাজীপুরের শ্রীপুরে মারধরের শিকার হয়ে দুই মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে মারা যান আবুল হোসেন (৩৫)। তাঁর বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।

আবুল হোসেন উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের মোড়লপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। পেশায় একজন দিনমজুর ছিলেন।

এ দিকে বিচার না পাওয়া পর্যন্ত মরদেহ দাফনের অপেক্ষা করছেন স্বজনেরা। স্বজনদের অভিযোগ—অভিযুক্তরা রাস্তায় মারধরের পর থেকে দুই মাসে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যু হয়েছে আবুলের।

নিহতের ছোট ভাই রুবেল মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই মাস আগে বাড়ির কাছে ভান্ডারি মোড় এলাকায় প্রতিবেশী আকবর আলীর ছেলে উসমান মিয়া আমার ভাইকে রাস্তায় ফেলে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। মারধরের কারণে তাঁর কোমরের তিনটি হাড় ভেঙে যায়। খবর পেয়ে আমরা তাঁকে প্রথমে পার্শ্ববর্তী গফরগাঁও উপজেলার গয়েশপুর বাজারে একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাই। এরপর তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক সপ্তাহ পর ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। অর্থের অভাবে আমরা ভাইয়ের সঠিক চিকিৎসা করাতে পারি নাই। সপ্তাহ খানিক আগে আমরা ভাই কে বাড়িতে নিয়ে আসি।’

আবুল হোসেনের বাবা মোসলেম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমি চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের দেই। এরপর চেয়ারম্যান দুটি নোটিশ করলেও অভিযুক্তরা চেয়ারম্যানের ডাকে ইউনিয়ন পরিষদে যায়নি। আমি গরিব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। টাকার অভাবে ছেলের ভালো চিকিৎসা করতে পারলাম না। চিকিৎসার অভাবে আমার ছেলে ধুঁকে ধুঁকে মারা গেল। বিচার না পেলে আমি লাশ দাফন করব না।’

মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
এ বিষয়ে কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজিজুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নোটিশ করা হয়েছিল। কিন্তু ওঁরা ইউনিয়ন পরিষদে হাজির হয়নি। যার কারণে বিষয়টি সমাধান হয়নি।’

চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আজ (সোমবার) সকাল ৯টার দিকে ওই যুবকের মৃত্যুর খবর শুনে সঙ্গে সঙ্গে ওই বাড়িতে ইউপি সদস্য আব্দুস ছামাদকে পাঠানো হয়েছে। ওই হ'ত্যার বিচার না পেলে মরদেহের দাফন করবে না বলে তারা জানিয়েছ।’

এ ঘটনায় শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মারধরের ঘটনা যেহেতু অনেক আগের, এ জন্য আঘাতের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Check Also

বিএনপি বাজারের বস্তিতে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট

রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানার পাশে বিএনপি বাজারের বস্তিতে আগুন লেগেছে। নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার …

4 comments

  1. সঠিক বিচার চাই।

  2. সঠিক বিচার চাই

  3. M Sumon Islam Sumon

    কে করবে বিচার

    এদেশে

  4. হতদরিদ্রের কিছুই নাই
    না আইন,না চিকিৎসা। আছে যন্ত্রনাদায়ক মৃত্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *