পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে আ.লীগ নেতা গ্রে’ফতার

বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় গাজীপুরের নাসির উদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশি হেফাজতে থাকার মধ্যেই মঙ্গলবার মধ্যরাতে সদর মেট্রো থানার এসআই উৎপল কুমার বাদী হয়ে পাঁচজনের নামে ভাঙচুরে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগে মামলা করেন।

বুধবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান সদর থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম।

রাতের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ নাজমা নাসরিন ও দুই আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। পরে তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার আদালতে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সদর মেট্রো থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম।

জানা গেছে, কিছুদিন ধরে মহাসড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ করে আসছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নেমে আসেন এবং মহাসড়ক বন্ধ করে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে প্রায় দুই ঘণ্টা মহাসড়কে সব যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এ সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশের একটি গাড়ি ভাংচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও দুই আ.লীগ নেতাসহ ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, গাজীপুরের সালনা বাজার এলাকায় নাসিরুদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অবস্থান। কলেজটি দীর্ঘদিনের পুরোনো ও এলাকায় বেশ সুনাম রয়েছে। ওই কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে অনেক দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। তারই জের ধরে মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ওই কলেজের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান ও সালনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান ১০-১২ জন বহিরাগত লোক নিয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কক্ষে যান।

এ সময় কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে কলেজের অধ্যক্ষ নাজমা নাসরিন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং চড়থাপ্পড় মারেন। এটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র হাসিবুল দেখে বিষয়টির প্রতিবাদ জানান। এ সময় অধ্যক্ষের কক্ষে থাকা বহিরাগতরা তাকে মারধর করেন। এ ঘটনা কলেজের অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এ সময় অধ্যক্ষের কক্ষে থাকা অধ্যক্ষসহ আওয়ামী লীগ নেতা ও বহিরাগতদের অবরোধ করে রাখেন। এ সময় কলেজের মাঠে থাকা পুলিশের একটি পিকআপভ্যান ভাংচুর করা হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাদের কলেজের পাশের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে ওই মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

খবর পেয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে অবরুদ্ধ করে রাখা দুই আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৫ জনকে থানা হেফাজতে নিয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে অধ্যক্ষের কাছে গেলে তিনি কোনো সমাধান না করে উল্টো অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এমনকি আমাদের অভিভাবকদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন। কারো এক মাসের বেতন বকেয়া থাকলে তাকে সবার সামনেই বকঝকা করে ক্লাস থেকে বের করে দেন। কলেজে ঠিকমতো ক্লাসও হয় না।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার ওসি মো. জিয়াউল হাসান জানান, অধ্যক্ষ নাজমা নাসরিন ও দুই আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৫ জনকে বুধবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Check Also

ধরে নিল কেন, ডাকলে তো নিজেই যেত: শামসের মা

সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ধরে নেওয়ার খবর শুনে উৎকণ্ঠিত তার মা করিমন নেসা।ছেলেকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *