রাতে একাধিক তরুণের ঘরে প্রবেশের কথা জানিয়েছেন সুমি

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় নিজ ঘর থেকে অটোচালক সুমন মিয়ার (২১) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার রাতে একাধিক তরুণ সুমনের ঘরে প্রবেশ করেছিল। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে এ তথ্য জানিয়েছেন নিহতের স্ত্রী সোমা আক্তার সুমি (১৯)। সুমনের মৃত্যুর পর সুমি স্বাভাবিক ও বিকারহীন ছিলেন, তাকে কান্না করতেও দেখা যায়নি। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে এটি পরিকল্পিত হ'ত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করছে সুমনের পরিবার ও পুলিশ।মধ্যরাতে শাশুড়িকে ডেকে ছেলের লাশ দেখালেন পুত্রবধূ

রৌমারী থানা পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, অভিযুক্ত সুমি জিজ্ঞাসাবাদে তার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ও স্বামীকে হ'ত্যার কথা স্বীকার করেছেন। একাধিক তরুণ সেদিন ঘরে প্রবেশ করার কথা জানালেও তাদের নাম জানাননি সুমি। তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হবে।

এদিকে, সুমনকে হ'ত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আকরামুল হক সৌরভ (১৭) নামে এক স্কুলছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের কর্তিমারী বাজার থেকে তাকে আটক করা হয়। সে যাদুরচর ইউনিয়নের বাইমমারী গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে। সৌরভের এ বছর উপজেলার কোমরভাঙ্গি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা। সুমন হ'ত্যাকাণ্ডে এই কিশোর ‘গুরুতরভাবে সংশ্লিষ্ট’ বলে দাবি করেছে পুলিশ।

এদিকে সুমন হ'ত্যার ঘটনায় নিহতের স্ত্রীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সুমনের বাবা মোতালেব। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে সুমনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। একই দিন গ্রেফতার সুমিকে আদালতে পাঠানো হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে আদালত অভিযুক্ত সুমিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে গত বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড়াইবাড়ি গ্রামের নিজ ঘরের বিছানায় অটোচালক সুমনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে তার পরিবার। রাত আড়াইটার দিকে সুমনের স্ত্রী সুমি নিজে তার শ্বশুর-শাশুড়িকে ডেকে নিয়ে গিয়ে সুমনের নিথর দেহ দেখান। সুমনের গলায় শ্বাসরোধ করার চিহ্ন পাওয়া গেছে।

সুমনের ফুফু রোজিনা জানান, সুমনের মৃত্যুর পর সুমির চোখে কোনও পানি ছিল না। তাকে কেউ কান্না করতেও দেখেনি। একেবারে স্বাভাবিক ছিলেন সুমি। পরিকল্পিতভাবে তাকে হ'ত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে সুমনের মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।

পুলিশের বরাত দিয়ে রোজিনা বলেন, ‘পুলিশরে সুমি কইছে, ওই রাইতে নাকি তিন জন ছেলে সুমনের ঘরে ঢুকছিল। কে কে ঢুকছিল তা আমাদের কয় নাই।’

প্রতিবেশী ফারুক হোসেন বলেন, ‘সুমনের মৃত্যুর পর তার বাবা চিৎকার দিলে আমরা ছুটে যাই। স্বামী মারা গেছে অথচ বউটার কোনও বিকার নাই। সে (সুমি) বলতেছিল, ছেলেটা নাকি গলায় কাপড় দিয়া আড়ের সাথে ঝুলছিল। সে নিজে নাকি নামাইছে। ঘরে স্বামীর লাশ। কিন্তু সুমির চোখে এক ফোঁটা পানিও নাই! পুলিশ নিয়া যাওয়ার আগ পর্যন্ত বউটাকে কেউ একবার কাঁদতে দেখে নাই।’

পুলিশ সুপার আল আসাদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের স্ত্রী বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ও হ'ত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য ও তদন্তের ভিত্তিতে এক কিশোরকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় তার (সৌরভ) গুরুতর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। একেবারে নিশ্চিত হয়ে তাকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যদেরও চিহ্নিত করতে কাজ করছে পুলিশ।’

Check Also

বিএনপি বাজারের বস্তিতে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট

রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানার পাশে বিএনপি বাজারের বস্তিতে আগুন লেগেছে। নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *