Breaking News

ডা. নিশাত আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে যা বললেন পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী

বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে খুলনায় চিকিৎসকদের চলমান কর্মবিরতিতে রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চিকিৎসকদের দাবি, পুলিশ কর্মকর্তার (এএসআই) গ্রেফতার ছাড়া আন্দোলন বন্ধ করবেন না।

এই ঘটনায় ওই পুলিশ কর্মকর্তাসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলাও করেছেন ডা. নিশাত আব্দুল্লাহ। আর যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের চিকিৎসক নিশাত আব্দুল্লাহ ও হক নার্সিং হোমের ডা. নুরুল হক ফকিরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই এএসআই-এর স্ত্রী।

এই নিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা স্ত্রী। তিনি দাবি করেছেন, ‘ডা. নিশাতের কথামতো তাকে আলাদা সময় না দেওয়া, অনৈতিক প্রস্তাবে সায় না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সন্তানের হাতে ভুল চিকিৎসা করেন। ফলে তার আঙুল পড়ে যায়। ওই চিকিৎসক আলাদা সময় চেয়েছিলেন, সন্তান নিয়ে চেম্বারে গেলে যৌন হয়রানি করতেন- যা তিনি মামলায় উল্লেখ করেছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী দাবি করেন, ‘আমার মেয়ের (৬) বাঁ হাতের আঙুল ২০১৮ সালে পুড়ে গেলে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা করি। সেখান থেকে সুস্থ হলেও কয়েকটি আঙুল জোড়া লেগে যায়। এ জন্য তার চিকিৎসা করাতে ২০২২ সালের ২১ আগস্ট শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালে আবারও ডা. নিশাত আব্দুল্লাহর কাছে নেওয়া হয়। দ্বিতীয়বার ২৭ সেপ্টেম্বর ফলোআপ করেন। এক পর্যায়ে চিকিৎসক জানান, মেয়ের হাতে সার্জারি লাগবে। আমরা তাতে সম্মত দিলে তিনি অনেক দিন ঘোরান। বেশকিছু দিন পর বলেন, হক নার্সিং হোমে অপারেশনটা করলে ভালো হবে। আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না বলে জানাই। পরে কষ্ট করে টাকা নিয়ে ওই হাসপাতালে যাই গত ১৭ জানুয়ারি। ১৮ জানুয়ারি অপারেশন হয়।’

তার দাবি, ‘অপারেশন করতে চার ঘণ্টা লাগবে বলা হলেও সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা লাগে। ওটির মধ্যে থেকে ৫-৬ বার ওষুধ আনতে বলে। অপারেশনের পর থেকে মেয়ের আঙুল কালো হয়ে যায়। ১৯ জানুয়ারি বিষয়টি ডাক্তারকে জানাই। ডাক্তার তখন দুই ঘণ্টা পর পর মেয়ের আঙুলের ছবি তুলে ডাক্তারের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে বলেন। মেয়ের বিষয়ে দেখা করতে বলেন। আমি দেখা করিনি। এরপর অনেক মেসেজ পাঠান। যেগুলো আমার কাছে ভালো লাগেনি। তিনি আমার সঙ্গে আলাদাভাবে সময় কাটাতে চান। তাই রিলিজ নিয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে আসি।’

‘এরপর একদিন ড্রেসিং করাতে গেলে মেয়েকে ওটির মধ্যে রেখে আমাকে চেম্বারে দেখা করতে বলেন। সেখানে গেলে আমার হয়রানি করেন। বাজে কিছু কথা বলেন। যখন সেটা বুঝতে পারি, তখন দ্রুত চলে আসি। এরপর মেয়ের ড্রেসিং করতে গেলে ইচ্ছাকৃতভাবে মেয়েকে ব্যথা দেয়। মেয়ে চিৎকার করে। তখন বলেন, কত পারিস চিৎকার কর তোর মা তোর কান্না পছন্দ করে। আমি তখন মেয়েকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসি, আর স্বামীকে সব খুলে বলি। এরপর ডাক্তার আমাকে আবার এসএমএস করেন যে তার ভুল হয়ে গেছে। ৬ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেয়ের ওই ডাক্তারের কাছেই ড্রেসিং করাই। আমার মনে হয়, আমি ওনার কথায় রাজি না হওয়ায় আমার মেয়ের ভুল চিকিৎসায় তার আঙুল হারিয়ে ফেললাম।’

‘আমার স্বামীকে বলার পর ডাক্তারকে মেয়ের বাম হাতের আঙুল পড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চান। তখন তার ওপর ডাক্তার হামলা করেন। ৯৯৯ এ কল করার পাশাপাশি আমি সোনাডাঙ্গা থানার ওসিকেও বিষয়টি জানাই। এরপর সেখানে পুলিশ আসে। স্বামীকে জানানোর পর তিনি ডিউটি থেকে ছুটি নিয়ে পোশাক পরিহিত অবস্থায় ঘটনাস্থলে আসেন। তখন শুধু বাগবিতণ্ডা হয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতেই ঘটনাটি সেখানেই মীমাংসা হয়। যেখানে আমার মেয়ের অঙ্গহানির জন্য আমরা মামলা করবো, সেখানে উল্টো আমাদেরই ভিকটিম হতে হচ্ছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের ওপর হামলা করে ডা. নিশাত এখন নিজেকে বাঁচাতে নতুন নাটক শুরু করেছেন।’

শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে খুলনার সব হাসপাতালে বুধবার সকাল ৬টা থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসকরা। এই কর্মবিরতি চলবে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। মঙ্গলবার বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা শাখা এই কর্মসূচি ঘোষণা করে। এতে আজ সকাল থেকেই খুমেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী দেখা বন্ধ রেখেছেন। খুমেক হাসপাতালের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীরা ডাক্তারের দেখা পাচ্ছেন না। জরুরি চিকিৎসক থাকার কথা বলা হলেও ওয়ার্ডে নার্সরাই প্রয়োজনীয় সেবা দিচ্ছেন। একই অবস্থা খুলনার সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের।

মামলার বিষয়ে সোনাডাঙা থানার ওসি মমতাজুল হক বলেন, ডা. নিশাত আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে পুলিশের এএসআই-এর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে বিরুদ্ধে হামলা, ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগে মামলা করেছে। আর এএসআই-এর স্ত্রী বাদী হয়ে ডা. নিশাতসহ দুই চিকিৎসকের নামে যৌন হয়রানির অভিযোগ ও মেয়ের ক্ষতিপূরণ দাবি মামলা দিয়েছেন। থানায় দুটি অভিযোগই নথিভুক্ত করা হয়েছে।

Check Also

রমজানে কুরআন শেখাবে ছাত্রলীগ

পবিত্র রমজান উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে মাসব্যাপী কুরআন শিক্ষার আয়োজন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *