Breaking News

আপত্তিকর ভিডিও কাণ্ডে আ.লীগ নেতার অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধনে হামলা

বাংলাদেশ বনাম আয়ারল্যান্ড লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের অব্যাহতির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। অশ্লীল ভিডিও কাণ্ডের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে ‘সচেতন রাজশাহীবাসী’র ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, এ হামলায় নেতৃত্ব দেন ডাবলু সরকারের ভাই নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ সরকার সেডু। এসেছিলেন আরেক ভাই মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকারও।

এছাড়া হামলায় অংশ নেন নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপন্ন সরকার ও নগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আলী মুনমুনসহ ২৫ থেকে ৩০ জন কর্মী। তবে নগর আওয়ামী লীগের অন্য কোনো নেতাকর্মী এসময় হামলাকারীদের সঙ্গে ছিলেন না।

মানববন্ধনের ব্যানারে লেখা ছিল- ‘ডাবলু সরকারের নোংরা ভিডিও রাজনীতিতে অশনি সংকেত ও সমাজের জন্য বিপজ্জনক। অবিলম্বে ডাবলু সরকারকে রাজনীতি থেকে অপসারণ করতে হবে।’

মানববন্ধন শুরুর পর হামলাকারীরা ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। একপর্যায়ে ধাওয়া দিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নারী-পুরুষকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ফুল বিক্রেতার টব নিয়েও ধাওয়া দিতে দেখা যায় হামলাকারীদের।

এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ডাবলু সরকারের ভাই সেডু বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারির বিরুদ্ধে মানববন্ধন। আপনারা কী করছেন? এ সময় হামলাকারীরা মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের গালিগালাজ করেন। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের সরিয়ে দিয়ে জিরোপয়েন্টে অবস্থান নেন ডাবলু সরকারের দুই ভাই এবং তাদের অনুসারীরা। পরে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন তাদেরও সরিয়ে দেন।

এর আগে সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হওয়া এ মানববন্ধনে কয়েকজন বক্তব্য দেন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ছড়িয়ে পড়া একটি আপত্তিকর ভিডিওকে কেন্দ্র করে এ মানববন্ধন ডাকা হয়েছিল। ওই ভিডিওতে ডাবলু সরকারের মুখ দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি দেখে মনে হচ্ছে, ডাবলু সরকার ভিডিও কলে কথা বলছেন। পরে বিবস্ত্র অবস্থায় অশালীন কাজ করতে দেখা যাচ্ছে।

ডাবলু সরকার দাবি করেছেন, ভিডিওতে থাকা ব্যক্তির মুখ তার। তবে শরীরের নিচের অংশ অন্য কারও। তার রাজনৈতিক ইমেজ ক্ষুণ্ণ করতেই এমনটি করা হয়েছে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া প্রধান বক্তা সাবেক ছাত্রনেতা আইনজীবী আবু রায়হান মাসুদ বলেন, যখন রাজশাহীকে এই দেশের শ্রেষ্ঠ নগরী হিসেবে দাঁড় করানো গেছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরো দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তখন কতিপয় হাইব্রিড দুষ্ট নেতার নৈতিকস্খলনের ভিডিও চিত্রকে আমরা অভিনন্দন জানাতে পারি না। এ বছর জাতীয় নির্বাচনের বছর। এ বছর এখানে সিটি নির্বাচনও হবে। কাজেই ডাবলু সরকারের এহেন অনৈতিক কর্ম জনমনে যে প্রভাব ফেলছে, এর প্রতিউত্তর মহানগরবাসী ব্যালটের মাধ্যমে দিলে সেটি শেখ হাসিনার ক্ষতি, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ক্ষতি। কাজেই প্রতিকারে যেতে হবে। এমন ব্যক্তিকে গ্রহণ করার জন্য রাজশাহীবাসী প্রস্তুত নেই। আমি আশা করব, কাল থেকে আওয়ামী লীগের সবাই এই ডাবলু সরকারের শাস্তি চেয়ে রাজপথে নেমে আসবেন।

ডাবলু সরকারের আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার দুই সপ্তাহ পরেও কেন তাকে বহিষ্কার করা হচ্ছে না- প্রশ্ন তুলে অন্য বক্তারা বলেন, আজ সারাদিন রাজশাহীবাসীর কাছে যাওয়া ছাড়াও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী এবং সমর্থিত সংগঠনের কাছে আমরা যাব। রাজশাহীর কৃতীসন্তান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের কাছে বিচার চাইব। যোগাযোগ করব দলের কেন্দ্রীয় নেতা এসএম কামালের সঙ্গেও। আমরা আবার আগামীকাল জিরোপয়েন্টে সব পেশার মানুষকে নিয়ে একত্রিত হব।

তাদের এ ঘোষণার পরেই হামলার ঘটনা ঘটে। তখন আইনজীবী মাসুদ বলেন, এই নাও বসলাম। মারো, আমাকে মারো। আমরা আওয়ামী লীগ করি না? মারো দেখি। মারো আমাকে মারো। আমি অ্যাডভোকেট আবু রায়হান মাসুদ। মারো দেখি মারো। তারপর অবশ্য পুলিশ হামলাকারীদের সরিয়ে দেয়।

মাসুদ বলেন, গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা নেতার এমন নৈতিকস্খলন মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের কষ্ট দেয়। লজ্জায় মুখ দেখাতে পারি না। তাই রাস্তায় নেমেছি।

এদিকে মানববন্ধনে হামলার বিষয়ে ডাবলু সরকারের ভাই শাহনেওয়াজ সরকার সেডুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন না ধরায় বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে হামলায় অংশ নেওয়া নগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আলী মুনমুন মানববন্ধন আয়োজকদের অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে বলেন, ডাবলু সরকার মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি (ডাবলু) উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। তার বিরুদ্ধে কোনো মানববন্ধন হবে এটা আমরা মেনে নিতে পারি না।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের বোয়ালিয়া জোনের উপকমিশনার আরেফিন জুয়েল বলেন, যে কেউ মানববন্ধন করতেই পারেন। ওই মানববন্ধনে হামলার খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যদের পাঠানো হয়েছে। আমি নিজেও সেখানে উপস্থিত হয়েছি। কেউ আহত হননি। আমরা সবার নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছি।

Check Also

রমজানে কুরআন শেখাবে ছাত্রলীগ

পবিত্র রমজান উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে মাসব্যাপী কুরআন শিক্ষার আয়োজন …

One comment

  1. মানুষ এই ধরনের নেতাদের কারনে।?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *