ক্যানসারে মায়ের মৃত্যু, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে চার শিশুর

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

মরণব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে দেড় মাস আগে মারা গেছেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার ঝর্ণা বিশ্বাস (৩০)। তিনি ছিলেন সদর ইউনিয়নের রুইয়ারকুল গ্রামের দিনমজুর সুদাস ব্রহ্মের (৩৬) স্ত্রী।

ঝর্ণার মৃত্যুতে চরম অসহায় হয়ে পড়েছে তার রেখে যাওয়া চার শিশুসন্তান। স্ত্রীর ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রায় নিঃস্ব সুদাস। এখন সন্তানদের দু-বেলা খাবার জোটানোর চিন্তায় অনেকটা বেসামাল তিনি।

কথা বলে জানা গেলো, সুদাস-ঝর্ণা দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে সবার বড় ১১ বছরের সজল, তারপর সাত বছরের স্বর্ণালী, এরপর তিন বছরের নয়ন এবং সবচেয়ে ছোট ১১ মাসের সুমি। মা হারানোর পর থেকে সুমি ও নয়নের কান্না যেন থামছেই না। বাবা কাজে গেলে অবুঝ শিশু দুটিকে দেখভালের দায়িত্ব পড়ে স্বর্ণালী ও সজলের ঘাড়ে।

এদিকে, পেশায় দিনমজুর হওয়ায় অনেক সময় কাজ থাকে না সুদাসের। আর কাজ না পেলে জ্বলে না চুলাও। সেইসঙ্গে চার শিশু সন্তানকে দেখাশোনার কেউ না থাকায় তাদের ছেড়ে কাজে গিয়েও সুদাস থাকেন চিন্তার মধ্যে। তারপরও সন্তানদের একা ঘরে রেখে কাজে যাওয়া ছাড়া উপায়ই নেই তার।

ক্যানসারে মায়ের মৃত্যু, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে চার শিশুর

পরিবারটির দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরে প্রতিবেশী দুলাল ব্রহ্ম বলেন, দেড় মাস আগে মরণব্যাধী ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান চার সন্তানের জননী ঝর্ণা বিশ্বাস। আর তার চিকিৎসার করাতে গিয়ে একেবারেই নিঃস্ব এখন স্বামী সুদাস। তারপরও সন্তানদের পেটের আহার জোগাতে সন্তাদের রেখে তাকে বাইরে যেতে হচ্ছে। বাবা বাইরে থাকলে শিশুগুলোকে দেখার কেউ থাকে না। এখন তাদের দুঃখের যেন অন্ত নেই।

অপর প্রতিবেশী শেফালী মণ্ডল বলেন, মা মারা যাওয়ার পর থেকেই ১১ মাসের ছোট্ট সুমি ক্ষুধার জ্বালায় কান্নাকাটি করে। আর তিন বছরের নয়নও তার মায়ের জন্য কান্নাকাটি করছে সবসময়। দিনমজুর বাবা কাজ না করলে তাদের চুলা জ্বলে না। আমরা আশপাশের প্রতিবেশীরা মাঝেমধ্যে এসে ওদের কিছু খাবার দিয়ে দেখেশুনে যাই।

ক্যানসারে মায়ের মৃত্যু, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে চার শিশুর

মায়ের মৃত্যুতে স্কুল যাওয়াও বন্ধ হয়ে গেছে স্বর্ণালী ও সজলের। তারা দুইজন পড়তো রুইয়ারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

সুদাস ব্রহ্ম বলেন, ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রীকে বাঁচাতে ধার-দেনা করে চিকিৎসা করিয়েছি। তাই এখন বিশাল ঋণের বোঝা মাথার ওপর। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে মহাবিপদের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছি। বর্তমানে সবকিছুর যে দাম তাতে ডাল-ভাতের যোগাড় হচ্ছে না। আর ছোট শিশুটির জন্য দুধ কিনবো কীভাবে?

ক্যানসারে মায়ের মৃত্যু, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে চার শিশুর

চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা বলেন, পরিবারটির এমন দুঃখ-দুর্দশার কথা জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি ছোট শিশুটির জন্য দুধও কিনে দেওয়া হয়েছে। আমরা ওই পরিবারটিকে একটি ভিজিডি কার্ড করে দেওয়ারও কাজ করছি। বিভিন্ন সরকারি সহায়তাও তারা যাতে পেতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখবো। এছাড়া স্থানীয় বিত্তবানদেরও পরিবারটির পাশের দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

Check Also

এরদোগানবিরোধী প্রচারণায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম ইকোনোমিস্ট

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ১০ দিন আগে প্রকাশিত ব্রিটিশ সাপ্তাহিক পত্রিকা ইকোনোমিস্ট কভার পেজসহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *