দুই দিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, শিশুর মৃত্যু

IPL ের সকল খেলা  লাইভ দেখু'ন এই লিংকে  rtnbd.net/live

দুই দিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলায় ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। তীব্র শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত মেলেনি সূর্যের দেখা। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। কোথাও কোথাও বৃষ্টির মতো ঝরেছে কুয়াশা। হেডলাইট জ্বালিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছে যানবাহন। হিম বাতাসে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ আর ছিন্নমূল মানুষ। আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের করছেন অনেকে।

এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে বোরো ধানের বীজতলা ও আলুক্ষেত রক্ষায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ধানের বীজতলা রক্ষায় সকালে চারার ওপর থেকে শিশির সরিয়ে দেওয়া, সম্ভব হলে চারা রাতের বেলা ঢেকে দেওয়া, বীজতলায় সেচ দিয়ে পরদিন সকালে পানি বের করে দেওয়া এবং বীজতলা লাল হলে জিপসাম ও ইউরিয়া সার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আলুক্ষেতে আগামধসা ও নাবিধসা ছত্রাক যাতে না লাগে, সে জন্য ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে বলা হয়েছে। এ জন্য মাঠপর্যায়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুভাস চন্দ্র সাহা।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আগুন পোহানোর সময় তাহারন নেসা (৭০) নামে এক বৃদ্ধা দগ্ধ হয়েছেন। তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃদ্ধার শরীর ৬০-৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করা হয়েছে। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সকালে আলমডাঙ্গা উপেজলার পুটিমারি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ তাহারন নেসা চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার রোয়াকুলি গ্রামের মৃত ঝড়ু মিস্ত্রীর স্ত্রী।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মারভিন অনিক চৌধুরী বলেন, বৃদ্ধার শরীরের ৬০-৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে শীতজনিত কারণে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বয়স্ক রোগীর সংখ্যা কমলেও কমেনি শিশু রোগীর সংখ্যা। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে শ্বাসকষ্ট ও শীতজনিত কারণে আব্দুল্লাহ নামে এক মাস বয়সী শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সে সদরের ডিঙ্গেদহ গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. মো. আতাউর রহমান

সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত তিন দিনে (শুক্রবার রাত ১২ টা পর্যন্ত) ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শিশুসহ ভর্তি হয়েছে ৯৩ জন রোগী। শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ৪৮ শিশু, এর মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ২১ শিশু। তবে ডায়রিয়া, শিশু ও মেডিসিন ওয়ার্ডে পূর্বের তুলনায় রোগীর সংখ্যা কম দেখা দেখেছে। এছাড়া প্রতিদিন বহির্বিভাগে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে হাসপাতালের আউটডোরে প্রায় চার শতাধিক শিশু, বয়োবৃদ্ধ চিকিৎসা নিচ্ছেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আতাউর রহমান বলেন, তীব্র শীতে রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বেশিরভাগই শিশু রোগী। শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে হাসপাতালের আউটডোরে প্রায় সাত শতাধিক বয়োবৃদ্ধ চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় ৪শ শিশু আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছে। শীতজনিত কারণে নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, শনিবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৫ শতাংশ। শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
 

Check Also

সোনার বাংলা গড়তে কূটনীতিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘স্বপ্নের সোনার বাংলা’ গড়তে দেশের কূটনীতিকদের আগামী দিনগুলোতে …